ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরোর অনুষ্ঠানে ড্রোন হামলা

সেনাবাহিনীর অনুষ্ঠানে স্ত্রী সিলিয়া ফ্লোরসের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো। ছবি: রয়টার্স
সেনাবাহিনীর অনুষ্ঠানে স্ত্রী সিলিয়া ফ্লোরসের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো। ছবি: রয়টার্স

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোর অনুষ্ঠানে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে প্রেসিডেন্ট অক্ষত রয়েছেন। ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে ভেনেজুয়েলার সেনাবাহিনীর ৮১তম বার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট বক্তৃতা দেওয়ার সময় ড্রোনের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ভেনেজুয়েলার যোগাযোগমন্ত্রী জর্জ রদ্রিগুয়েজ বলেছেন, মাদুরোকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালানো হয়েছে। এতে সাত সেনাসদস্য আহত হয়েছেন।

টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত ওই অনুষ্ঠানের ফুটেজে দেখা যায়, খোলা স্থানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানো সেনাসদস্যদের সামনে মঞ্চে বক্তৃতা করছেন মাদুরো। হঠাৎ করে বিকট শব্দ শুনে মাদুরো এবং তাঁর সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারা চমকে উঠে ওপরের দিকে তাকান। ওই সময় অনুষ্ঠানের শব্দব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রচার বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত দেখা যায়, শত শত সেনাসদস্য দৌড়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে যাচ্ছেন।

যোগাযোগমন্ত্রী রদ্রিগুয়েজ জানান, প্রেসিডেন্টের কাছাকাছি বোমাভর্তি দুটি ড্রোনের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এই হামলার জন্য তিনি দেশটির ডানপন্থীবিরোধী গোষ্ঠীকে দায়ী করেছেন। গত মে মাসে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনে তারা হেরে যাওয়ার পর এখন আবার ব্যর্থ হয়েছে। ওই নির্বাচনে আরও ছয় বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মাদুরো।

হামলায় আহত সেনাসদস্যদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট তাঁর মন্ত্রী ও সামরিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

এখন পর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি কেউ।

এর আগে গত বছরের জুনে হেলিকপ্টার থেকে গ্রেনেড ছোড়া হয় দেশটির সুপ্রিম কোর্টের ওপর। অস্কার পি রেজ নামে হেলিকপ্টারের পাইলটকে ওই হামলার জন্য দায়ী করা হয়। এ বছরের জানুয়ারিতে কারাকাসের কাছে এক অভিযানে পুলিশের গুলিতে ওই পাইলট নিহত হন।

২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন মাদুরো। মাদুরোর প্রশাসনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে গণতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার অভিযোগ রয়েছে। বিরোধী দলের মতে, মাদুরো স্বেচ্ছাচারী শাসক এবং নিজ দলের নিয়ন্ত্রণে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের কঠোরভাবে দমন করেন। যদিও তাঁর অনুসারীদের মতে, তিনি আরেকটি ক্যু থেকে দেশকে রক্ষা করে চলেছেন।

মে মাসে পুনর্নির্বাচনের সময় তেলসমৃদ্ধ দেশটিতে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়। এতে লাখ লাখ মানুষ দেশ ছেড়ে চলে যায়।

এরপরও মাদুরো ও তাঁর দল ইউনাইটেড সোশ্যালিস্ট পার্টির (পিএসইউভি) প্রতি অনুগত লোকের সংখ্যা কম নয়। তাদের মতে, সরকারের কারণে নয়, ভেনেজুয়েলার সংকট সৃষ্টি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মতো সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর কারণে।