পোল্যান্ডকে ইইউ আদালতের সতর্কতা

পোল্যান্ডে দেশটির আইন ও আদালতসংক্রান্ত সংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ছবি: সংগৃহীত
পোল্যান্ডে দেশটির আইন ও আদালতসংক্রান্ত সংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ছবি: সংগৃহীত

পোল্যান্ডের সরকার গণতান্ত্রিক কাঠামো ভেঙে ক্রমেই স্বেচ্ছাচারী সরকারে পরিণত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সিদ্ধান্ত অমান্য করে শরণার্থীদের গ্রহণে অস্বীকার করছে হাঙ্গেরি সরকার। ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নিয়ম ভেঙে এমন অসদাচরণের জন্য পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছেন ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিস।

বিচারপতিদের চাকরির বয়সসীমা হ্রাস করাকে কেন্দ্র করে পোল্যান্ডের রক্ষণশীল সরকারকে সতর্ক করেছেন লুক্সেমবার্গে অবস্থিত ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিস। পোল্যান্ড সরকারের বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়ে কিছুদিন থেকেই ব্রাসেলস ও ওয়ারশোর মধ্যে চলছে টানাপোড়েন।

পোল্যান্ডের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের চাকরির বয়সসীমা ৭০ থেকে কমিয়ে ৬৫ বছর করাকে কেন্দ্র করে দেশটিতে বিরোধী দলসহ সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অনেকেই মনে করছেন, পোল্যান্ডের রক্ষণশীল সরকার ভবিষ্যতে দেশটিতে নানা রকম স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি ঝামেলা কমাতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বয়সসীমা হ্রাসের কারণে সুপ্রিম কোর্টের ২৭ জন বিচারপতি একসঙ্গে অবসরে চলে যেতে বাধ্য হন। শুধু পোল্যান্ডর রাষ্ট্রপতি আন্দ্রিয়াজ ডুডার সম্মতিক্রমে এদের কেউ কেউ বিচারপতি হিসেবে বহাল থাকতে পারবেন।

পোল্যান্ডের ক্ষমতাসীন ধর্মীয় রক্ষণশীল দল পিস বা আইন ও বিচার নামের দলটি বিচারকদের এক রকম জোর করে অবসরে পাঠানোর বিষয়টি ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিস ইইউ জোটের চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে। পোল্যান্ড সরকার ২৬ পৃষ্ঠার এক চিঠিতে ডেনহাগের ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিসকে জানিয়েছে, তাদের দেশের আইন ও আদালতসংক্রান্ত সংস্কার দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবেই দেখছে। অন্যদিকে ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিস, বিচারকদের একরকম জোর করে অবসরে পাঠানোর বিষয়টিকে দেশটির গণতন্ত্র ও আইনের শাসনকে কুক্ষিগত করার প্রয়াস হিসেবে দেখছে।

এর আগে ২০১২ সালে হাঙ্গেরির ডানপন্থী রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট ভিক্টর উরবানের সরকারও দেশটির বিচারপতিদের অবসরে যাওয়ার বয়স ৬২ করবার চেষ্টা করে। ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিসের প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত তা ফলপ্রসূ হয়নি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলো ২০১৫ সালে ইউরোপে আসা শরণার্থীদের নিয়ে একটি বণ্টন চুক্তি করেছিল। পরে পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরি চুক্তি মোতাবেক শরণার্থীদের নিতে অস্বীকার করার বিষয়টিও ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিসে সুরাহা হওয়ার কথা হয়।