আত্মকেন্দ্রিক উদীয়মান জাতীয়তাবোধ বিশ্বব্যাপী শান্তির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কথা বলে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত একটি বিশ্বের আহ্বান জানিয়েছেন হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই। আজ ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমায় আণবিক বোমা হামলার ৭৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। এএফপির খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমা নগরে যুক্তরাষ্ট্রের বোমারু বিমান এনোলা গে থেকে ‘লিটল বয়’ নামের আণবিক বোমাটি ফেলা হয়েছিল। স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ৬০০ মিটার উচ্চতা থেকে বোমাটি ফেলেন মার্কিন বৈমানিকেরা। এতে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়।
হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই পার্কের বেদিতে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন। তিনি পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি বিশ্বজুড়ে উদীয়মান জাতীয়তাবাদের যে ঝুঁকি, সে সম্পর্কেও সচেতন করেন।
নির্দিষ্ট করে কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে কাজুমি মাতসুই বলেন, ‘কয়েকটি দেশ স্পষ্টভাবে আত্মকেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদ প্রকাশ করছে এবং তাদের পারমাণবিক অস্ত্র আধুনিকায়ন করছে। স্নায়ুযুদ্ধের মধ্য দিয়ে শেষ হওয়া উত্তেজনাকে তারা আবারও পুনরুজ্জীবিত করছে।’
মেয়র পারমাণবিক অস্ত্র পুরোপুরি বিলোপ করারও আহ্বান জানান। মেয়র বলেন, ‘যদি মানুষই ইতিহাস ভুলে যায়,...তাহলে আমরা আবারও ভয়ানক ভুল করব। তাই আমাদের হিরোশিমার ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলা চালিয়ে যেতে হবে। পারমাণবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণের চেষ্টাও অব্যাহত রাখতে হবে।
জাপান সরকারের কর্মকর্তারা নিয়মিত বলে আসছেন, তাঁরা আণবিক অস্ত্রের বিরোধিতা করেন। কিন্তু দেশটির প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্রের ওপর নির্ভরশীল। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সরকার জাতিসংঘের পারমাণবিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা চুক্তিতে সই না করার সিদ্ধান্ত নেয়। আজকের এই অনুষ্ঠানে আবে বলেন, পারমাণবিক ও অপারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশগুলোর মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরির দায়িত্ব জাপানের। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পারমাণবিক অস্ত্র কমানোর বিষয়টিতে কাজ করার পদ্ধতি নিয়ে কয়েকটি দেশের মধ্যে ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
পারমাণবিক অস্ত্র হ্রাস করতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের নীতিগুলোকে মেনেই দুই পাশের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরিতে ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করে যাব এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চেষ্টায় নেতৃত্ব দেব।’