ইমরান খানের সৎমেয়ে পিটিআইতে যোগ দিলেন

ইমরান খানের সঙ্গে তাঁর সৎমেয়ে মেহেরুন্নিসা হায়াত (বাঁয়ে)। ছবি: ডন নিউজ টিভির সৌজন্যে
ইমরান খানের সঙ্গে তাঁর সৎমেয়ে মেহেরুন্নিসা হায়াত (বাঁয়ে)। ছবি: ডন নিউজ টিভির সৌজন্যে

পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সৎমেয়ে মেহেরুন্নিসা হায়াত পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি ইমরানের স্ত্রী বুশরা মানিকার মেয়ে। আজ সোমবার ইমরানের সঙ্গে বৈঠকের পর মেহেরুন্নিসা পিটিআইতে যোগ দেন।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, ইমরান খান আজ সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে পিটিআইয়ের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন। এ–সংক্রান্ত বৈঠকের পর দলটিতে যোগ দেন মেহেরুন্নিসা। পিটিআইপ্রধান ইমরানের সঙ্গে বৈঠকের সময় মেহেরুন্নিসার মা বুশরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে লাহোরে ইমরান বিয়ে করেন বুশরাকে। ইমরানের সঙ্গে বিয়ের পর বুশরা জনসমক্ষে আসেননি এবং রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি।

গত ২৫ জুলাই পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে জয়লাভ করে ইমরানের দল পিটিআই। ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন তিনি। ইতিমধ্যে সরকার গঠনের জন্য মিত্রদের সমর্থন নিয়ে প্রয়োজনীয় ১৩৭ আসন নিশ্চিত করেছেন তিনি।

পিটিআইয়ের মনোনয়ন
পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ও পার্লামেন্ট জাতীয় পরিষদের নেতা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ইমরান খানকে মনোনয়ন দিয়েছে তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। সোমবার দলটির সংসদীয় কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে ইমরান খান তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, জনকল্যাণে তিনি সবচেয়ে কার্যকর সিদ্ধান্ত নেবেন।

প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ঠিক করতে সোমবার ইসলামাবাদের একটি হোটেলে বৈঠক করেন পিটিআইয়ের সংসদীয় কমিটির সব সদস্য।

বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে দলটির জ্যেষ্ঠ নেতা আরিফ আলভি বলেন, ‘ইমরান খানের মনোনয়ন এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। সংসদীয় কমিটির ১২০ সদস্যের সবাই এই বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছেন। মন্ত্রিসভার সদস্য নির্বাচনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ইমরান খান নিজেই নেবেন।’

বৈঠক শুরু হওয়ার পর পিটিআই নেতা শাহ মোহাম্মদ কুরেশি দলের সংসদীয় নেতা ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য ইমরান খানের পক্ষে প্রস্তাব তুলে ধরেন। প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। দুটি পদে ইমরান খানের মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁকে অভিনন্দন জানান দলের সব সদস্য।

বৈঠকে বক্তব্য দেওয়ার সময় পিটিআইপ্রধান দলের ইতিহাস, নিজের সংগ্রাম, অর্জনের কথা (১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ জয়সহ) স্মরণ করেন। তুলে ধরেন পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা। তিনি বলেন, ‘আমার লক্ষ্য পার্লামেন্ট সদস্য কিংবা প্রধানমন্ত্রী হওয়া নয়। উদ্দেশ্য হচ্ছে, যে জন্য জাতি আমাদের ভোট দিয়েছে, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জাতির সেই কাজ করা প্রয়োজন।’

পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে এবং এই সংকট আমাদের সমাধান করা দরকার। দেনা পরিশোধের জন্য আমরা প্রবাসী পাকিস্তানিদের দিকে হাত বাড়াব।’

জাতীয় নির্বাচনে দলের জয়ের পর প্রথমবারের মতো ইমরান খান ইসলামাবাদে তাঁর বানিগালার বাসভবন থেকে বের হয়ে বৈঠকে যোগ দেন। ভ্রমণের সময় নিরাপত্তা প্রটোকল ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে অস্বীকৃতি জানালেও গতকাল তাঁর গাড়ির সঙ্গে ছিল একাধিক গাড়ি ও কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা।

পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের মুখপাত্র নাঈমুল হক বলেন, ‘ইমরান খান সব সময়ই নিরাপত্তা প্রটোকল ও ভিআইপি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে। কিন্তু বর্তমান সরকার তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল দিয়েছে। আমরা মাত্র চারটি গাড়ি চেয়েছিলাম।’

পিটিআই অন্য পদগুলোর জন্যও প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সূত্রমতে, জাতীয় পরিষদের পরবর্তী স্পিকার পদের জন্য এগিয়ে রয়েছেন আলভি। পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান কুরেশিকেও ওই পদের শক্ত প্রার্থী হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। সিন্ধু প্রদেশের গভর্নর পদে দলটির প্রার্থী হবেন ইমরান ইসমাইল। আর জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার হতে পারেন জারতাজ গুল ও শাহরিয়ার আফ্রিদি।