নাগাসাকিতে বাংলাদেশের জায়গা আছে, ভাস্কর্য নেই

জাপানের নাগাসাকি শহরের নাগাসাকি শান্তি উদ্যানে স্থাপিত পিস স্ট্যাচু। ছবি: রয়টার্স
জাপানের নাগাসাকি শহরের নাগাসাকি শান্তি উদ্যানে স্থাপিত পিস স্ট্যাচু। ছবি: রয়টার্স

জাপানের নাগাসাকি শহরের ‘নাগাসাকি শান্তি উদ্যানে’ একটি ভাস্কর্য স্থাপনের জন্য চার বছর আগে উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে একটি ভাস্কর্যের নকশাও চূড়ান্ত করেছিল। কিন্তু ভাস্কর্যটি এখন পর্যন্ত স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নাগাসাকি শান্তি উদ্যানে ইতালি ও পোল্যান্ডের ভাস্কর্যের মাঝে বাংলাদেশের ভাস্কর্য স্থাপন করার কথা রয়েছে। ইতালি, পোল্যান্ডসহ ১৪টি দেশের ভাস্কর্য ইতিমধ্যে সেখানে স্থাপিত হয়েছে।

১৯৪৫ সালের ৯ আগস্ট জাপানের নাগাসাকি শহরে আণবিক বোমা হামলা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এর তিন দিন আগে ৬ আগস্ট হিরোশিমা শহরে আণবিক বোমা হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র। এটি ইতিহাসের প্রথম আণবিক বোমা হামলা। শহর দুটি মানবতার চরম বিপর্যয়ের স্মৃতি বহন করছে। জাপান সরকার নাগাসাকি শহরে ১৯৫৫ সালে শান্তি উদ্যান গড়ে তোলে। জাপানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে—এমন দেশগুলোর জন্য এই উদ্যানে জায়গা নির্ধারণ করা আছে। উদ্যানটি এখন ‘বিশ্বজনীন শান্তি ও নিরাপত্তার’ প্রতীক হয়ে উঠেছে।

ওই উদ্যানে বাংলাদেশের ভাস্কর্য স্থাপনের জন্য ২০১৫ সালে স্থাপত্য অধিদপ্তর আয়োজিত প্রতিযোগিতায় ৬২টি নকশা জমা পড়েছিল। সেগুলোর মধ্যে ভাস্কর অনিন্দ্য পণ্ডিতের নকশাকে সেরা নির্বাচিত করে ১০ সদস্যের জুরিবোর্ড।

নির্বাচিত ভাস্কর্যটির দৈর্ঘ্য হবে তিন মিটার। এটি কালো গ্রানাইট পাথরে মোড়ানো থাকবে। ভাস্কর্যের ওপরের অংশে শ্বেতপাথরের একটি সাদা পাখি থাকবে। এটি নির্মাণে খরচ হবে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।

ভাস্কর অনিন্দ্য পণ্ডিত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাস্কর্যে আমাদের সংস্কৃতি আছে। আছে শোক ও শান্তি একসঙ্গে।’

স্থাপত্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, নাগাসাকি শান্তি উদ্যানে ভাস্কর্য স্থাপনের সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে স্থাপত্য অধিদপ্তর ভাস্কর্য নকশার প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ২০১৫ সালের ২৩ জুন চূড়ান্ত নির্বাচনপ্রক্রিয়া শেষ হয়। এরপর স্থাপত্য অধিদপ্তরের আর কিছু করণীয় নেই।

ভাস্কর্য স্থাপনের অগ্রগতি সম্পর্কে স্থাপত্য অধিদপ্তরের উপপ্রধান স্থপতি (সার্কেল-১) আ স ম আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাজ ছিল ভাস্কর্যের নকশা নির্বাচন করা। আমরা সেটা করেছি।’

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ছয় মাস আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল গণপূর্ত বিভাগের প্রতিনিধিদল জাপান যাবে। ভাস্কর্যটি দেশ থেকে তৈরি করে জাপানে নেওয়া সুবিধাজনক হবে, নাকি সেখানেই এটি নির্মাণ করতে হবে, সে বিষয়ে প্রতিনিধিদল মতামত দেবে। তবে সফরটি এখনো হয়নি।

অবশ্য গণপূর্ত বিভাগের একজন কর্মকর্তা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, কাজটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিলেই গণপূর্ত বিভাগের প্রতিনিধিদল জাপান যাবে।