চীনের মুসলিম গোষ্ঠী উইঘুরের ১০ লাখ মানুষকে আটক রাখা হয়েছে: জাতিসংঘ

উইঘুর সম্প্রদায়ের মানুষ। ছবিটি ২০১৩ সালে স্থানীয় এক বাজার থেকে তোলা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
উইঘুর সম্প্রদায়ের মানুষ। ছবিটি ২০১৩ সালে স্থানীয় এক বাজার থেকে তোলা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

চীনের উগ্রপন্থীবিরোধী রাজনৈতিক শিবিরগুলোয় উইঘুর সম্প্রদায়ের ১০ লাখ মুসলিমকে আটক রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছে জাতিসংঘ। তবে জাতিসংঘের এ দাবির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি চীন সরকার।

বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি জানিয়েছে, চীন ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে ‘কাউন্টার-এক্সট্রিমিজম সেন্টারগুলোয়’ আটক রেখেছে। জেনেভায় চলমান অধিবেশনে জাতিসংঘের জাতিগত বৈষম্য নির্মূল কমিটির সদস্য গে ম্যাকডওগাল চীনের ওপর জাতিসংঘের দুদিনব্যাপী বৈঠকে এ দাবি করেছেন।

চীনের পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত স্বর্ণ, তেল ও গ্যাসসম্পদে সমৃদ্ধ শিনচিয়াং প্রদেশে  মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাঁরা উইঘুর সুন্নি মুসলমান। তাঁরা চীনা নয়, তুর্কি ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত উইঘুর ভাষায় কথা বলেন। বিচ্ছিন্নতাবাদ ও ধর্মীয় জঙ্গিবাদের হিংসাত্মক তৎপরতা রয়েছে এই প্রদেশে। উইঘুর জঙ্গিদের প্রধান সংগঠন ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্টকে (ইআইটিএম) যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করেছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র শিনচিয়াংয়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও উইঘুরদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে উচ্চকিত।

বৈঠকে গে ম্যাকডওগাল বলেন, এত বিপুলসংখ্যক উইঘুর আটকের ঘটনা উদ্বেগজনক। উইঘুরের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলকে বেইজিং এমন অবস্থা করেছে যে সেটাকে অন্তরীণ করে রাখার মতো বলা যায়।

তবে এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে চীনের প্রতিনিধিদল কোনো মন্তব্য করেনি।

এর আগে বেইজিং বরাবর এই ধরনের রাজনৈতিক শিবিরের অস্তিত্ব অস্বীকার করে আসছে।

আটক উইঘুর বন্দীদের স্বজনদের বিক্ষোভ। ছবিটি ২০০৯ সালে তোলা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
আটক উইঘুর বন্দীদের স্বজনদের বিক্ষোভ। ছবিটি ২০০৯ সালে তোলা। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

অভিযোগ রয়েছে, কয়েক মাস ধরে উইঘুরসহ অন্যান্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের শিনচিয়াং প্রদেশ থেকে আটক করা হচ্ছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলো জাতিসংঘ কমিটির কাছে প্রতিবেদন দিয়েছে যে চীনের বিভিন্ন শিবিরে উইঘুরদের গণহারে আটক করা হচ্ছে। সেখানে বন্দীদের চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের জন্য বাধ্য করা হয়।

দ্য ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই উইঘুরদের আটক করা হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের কমিউনিস্ট স্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়। তাঁদের ঠিকভাবে খাবার দেওয়া হয় না। শারীরিক নির্যাতনও করা হয়।

গত এপ্রিলে মার্কিন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক লরা স্টোন বলেন, সরকারের কঠোর অভিযানের অংশ হিসেবে লাখ লাখ মানুষকে বিভিন্ন কেন্দ্রে আটক করা হয়েছে।

এর জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়িং বলেন, শিনচিয়াং প্রদেশে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষেরা শান্তি ও সন্তুষ্টির সঙ্গে কাজ করে এবং শান্তিপূর্ণ উন্নত জীবন উপভোগ করে।