লন্ডনে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাইরে পথচারীদের ওপর গাড়ি, আহত ৩

হামলার ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। লন্ডন, যুক্তরাজ্য, ১৪ আগস্ট। ছবি: এএফপি
হামলার ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। লন্ডন, যুক্তরাজ্য, ১৪ আগস্ট। ছবি: এএফপি

লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টারে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাইরে আবারও পথচারীদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনজন পথচারী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। যুক্তরাজ্যের পুলিশ এ ঘটনাকে প্রাথমিকভাবে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে বিবেচনা করছে।

ঘটনাস্থল থেকে গাড়ির চালককে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তির বয়স ত্রিশের কম বলে জানিয়েছে পুলিশ।

যুক্তরাজ্য পুলিশের সদর দপ্তর ‘স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড’ এক বিবৃতিতে জানায়, গাড়িতে চালক ছাড়া অন্য কাউকে পাওয়া যায়নি। কোনো অস্ত্র বা বিস্ফোরকও পাওয়া যায়নি। দক্ষিণ লন্ডন পুলিশ স্টেশনে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার পরপর ওয়েস্টমিনস্টার পাতাল রেলস্টেশনসহ আশপাশের রাস্তাগুলোতে পথচারী ও গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। মোতায়েন করা হয় সশস্ত্র পুলিশ।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে জানায়, পশ্চিমগামী সিলভার রঙের একটি ফোর্ড ফিয়েস্তা হুট করে রাস্তা পরিবর্তন করে পূর্বগামী লাইনে ঢুকে পড়ে। উল্টো পথে প্রবেশ করা গাড়িটি ইচ্ছাকৃতভাবে পথচারীদের ওপর তুলে দেওয়া হয় বলে তাদের মনে হয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে গাড়িটি ফুটপাত মাড়িয়ে পার্লামেন্টের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে সজোরে আঘাত করে বিধ্বস্ত হয়।

বিবিসি জানিয়েছে, আহত তিনজনের মধ্যে একজন সাইকেলারোহী এবং একজন পথচারীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অন্য একজন পথচারীকে ঘটনাস্থলেই সেবা দিয়েছেন অ্যাম্বুলেন্সকর্মীরা। আহত ব্যক্তিরা আশঙ্কামুক্ত।

সকালবেলা লন্ডনের মানুষ প্রতিদিনের মতো কাজের উদ্দেশ্যে বের হচ্ছিলেন। এমন সময়ে ওয়েস্টমিনস্টার এলাকায় পথচারীদের ওপর গাড়ি উঠে যাওয়ার খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কেননা গত বছরের মার্চে একই এলাকায় খালিদ মাসুদ নামের এক হামলাকারী পথচারীদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেন। এতে চারজন নিহত হয়েছিলেন। ওই বছর লন্ডন ব্রিজ এলাকায়ও পথচারীদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে একই কায়দায় হামলার ঘটনা ঘটে। সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ‘আইএস’ ওই সব হামলার দায় স্বীকার করে।

মঙ্গলবারের ঘটনা কোনো সন্ত্রাসী কাণ্ড কি-না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে গাড়ির চালককে গ্রেপ্তারের ঘটনাকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিবিসির প্রতিবেদক জুন কেলি বলছেন, ‘এখন আটককৃত ব্যক্তির জীবনবৃত্তান্ত যাচাই করা হবে, সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকির তালিকায় নাম রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। এই ব্যক্তি কার সঙ্গে চলাফেরা করে এবং তাঁর মানসিক অবস্থা কেমন—সবকিছু যাচাইবাছাই করবে তদন্ত দল।’

প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ এবং লন্ডেনের মেয়র সাদিক খান এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা ও জরুরি সেবায় নিয়োজিত বাহিনীগুলোর ত্বরিত পদক্ষেপ এবং সাহসের প্রশংসা করেন তাঁরা। মঙ্গলবার বিকেলেই পরিস্থিতি পর্যালোচনায় রাষ্ট্রের নিরাপত্তাবিষয়ক সর্বোচ্চ কমিটি ‘কোবরা’র বৈঠক হওয়ার কথা।