বিজেপিকে হটিয়ে 'প্রকৃত' স্বাধীনতা আনার ঘোষণা মমতার

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফাইল ছবি। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফাইল ছবি। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ব্রিটিশদের তাড়িয়ে স্বাধীনতা পেয়েছিল ভারত। আগামী বছরের নির্বাচনে শাসক দল বিজেপিকে হটিয়ে ভারতের ‘প্রকৃত’ স্বাধীনতা আনবেন বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ভারতের ৭২তম স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার বেহালায় স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে ভারতবর্ষ থেকে বিজেপিকে উৎখাত করে ভারতকে প্রকৃত অর্থে স্বাধীন আমরা করবই। আগামী বছর এই দিনে বেহালাতেই আমরা নতুন করে স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপন করব।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা বলেন, ‘তোমাদের (বিজেপিকে) আমরা চার বছর দেখেছি। আর ছয় মাস দেখব। তারপর তোমরা দেখবে, মানুষ তোমাদের কী বলে?’ তিনি আরও বলেন, ‘বিজেপির শাসনে ভারতের স্বাধীনতা আজ বিপন্ন।’

মমতা আসামের নাগরিক নিবন্ধন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সত্যিই কি ভারতের নাগরিকেরা স্বাধীন? স্বাধীনতার এত বছর পর এখনো ভারতীয়কে তাঁর নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হয়? আসামে যে ৪০ লাখ মানুষের নাম ওঠেনি, এর মধ্যে ২৫ লাখ বাঙালি হিন্দু, ১৩ লাখ বাঙালি মুসলিম আর বাকিরা অসমিয়া, নেপালি ও বিহারি। একটা জাতিকে পছন্দ করি না বলে কি তাদের তাড়িয়ে দেওয়া যায়?’

মমতা বলেন, জাতিসংঘের কনভেনশন বলছে, সমস্যায় পড়ে অন্য দেশ থেকে বা অন্য রাজ্য থেকে কেউ এসে আশ্রয় চাইলে দিতে হয়। অথচ আসামেই ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে ১ হাজার ২০০ মানুষকে। এতে ভারতীয় নাগরিকদের অসম্মান করা হয়েছে। তাদের পরাধীনভাবে রাখা হয়েছে।

গতকাল আসামের ১৪টি সংগঠন নিয়ে গড়া ‘ইউনাইটেড বেঙ্গল ফ্রন্ট’-এর ২২ জন প্রতিনিধি রাজ্য সচিবালয় নবান্নে এসে দেখা করেন মমতার সঙ্গে। এই প্রতিনিধিরা তুলে ধরেন নানা অভিযোগ। তাঁরা দাবি করেন, ১৯৬৪, ১৯৬৫, ১৯৬৬ সালের নাগরিক হওয়ার সব তথ্য ও প্রমাণপত্র থাকলেও নাগরিকদের নাম কেটে দিচ্ছে আসামের বিজেপি।

ফ্রন্টের সঙ্গে বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনের মাধ্যমে ভারতবর্ষ থেকে বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশকে প্রকৃত স্বাধীনতা এনে দেওয়া হবে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ভাগ্য করে পশ্চিমবঙ্গে জন্মেছি। তা না হলে আমাকেই অনুপ্রবেশকারী বলত।’

মমতা ওই সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বিজেপিকে ভয় পাই না। ভারতবর্ষে আমিই বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলতে পারি। বাকিরা ভয়ে পারে না। আমি বিজেপির কাছে আত্মসমর্পণ করব না। প্রতিবাদ করি বলে আমি নাকি উগ্রপন্থী। আমার নামে মামলা করেছে। আমি মরতেও রাজি। কিন্তু বিজেপির কাছে আত্মসমর্পণে রাজি নই।’