পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ২০ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছেন

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ২০ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছেন। স্থানীয় সময় আগামীকাল সোমবার মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেবেন। ক্ষমতাসীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) মুখপাত্র ফাওয়াদ চৌধুরী এমন তথ্য জানিয়েছেন।

জিও নিউজের খবরে জানা যায়, ফাওয়াদ চৌধুরী এ নিয়ে একটি টুইট করেছেন। ওই টুইটে তিনি বলেন, মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের ১৫ জন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর পাঁচজন উপদেষ্টাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একনজরে দেখা যাক ইমরানের মন্ত্রিসভার ১৫ জন মন্ত্রী কারা।

ফারুক নাসিম
ফারুক নাসিম

ফারুক নাসিম: মোহাম্মদ ফারুক নাসিম আইন ও বিচারমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ১৯৬৭ সালের ২৬ জুন জন্মগ্রহণ করেন ফারুক নাসিম। তিনি সবচেয়ে কম বয়সে সিন্ধু প্রদেশের অ্যাডভোকেট জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুত্তাহিদা কওমি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ফারুক। তিনি সিনেটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের রাজনৈতিক প্রতারণাবিষয়ক মামলায় আইনবিষয়ক উপদেষ্টাও ছিলেন ফারুক।

পারভেজ খটক
পারভেজ খটক

পারভেজ খটক: ২০১৩ সালের ৩১ মে থেকে চলতি বছরের ৬ জুন পর্যন্ত খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন পারভেজ খটক। তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। খটক অবশ্য এর আগে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সেচমন্ত্রী এবং শিল্প ও শ্রমমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। লাহোরের প্রখ্যাত অ্যাচিসন কলেজে পড়াশোনা করেছেন তিনি। তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টির রাজনৈতিক কর্মী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

শাহ মেহমুদ কোরেশি
শাহ মেহমুদ কোরেশি

শাহ মেহমুদ কোরেশি: ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন দল পিটিআইয়ের সাবেক ভাইস চেয়ারপারসন শাহ মেহমুদ কোরেশির পরিচিতি রয়েছে। তিনি হবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ১৯৫৬ সালের ২২ জুন জন্ম নেন কোরেশি। ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি ভাইস চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি পাঞ্জাবের সাধারণ পরিষদ ও মন্ত্রিসভায় ছিলেন। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি পাঞ্জাবের পার্লামেন্টবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত কোরেশি মুলতানের মেয়র ছিলেন।

আসাদ ওমর
আসাদ ওমর

আসাদ ওমর: পাকিস্তানের বাণিজ্য, রাজস্ব ও অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী হবেন আসাদ ওমর। ১৯৬১ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে জন্ম নেন তিনি। সাত ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট। এনগ্রো পলিমার এবং কেমিক্যালসের সাবেক প্রধান নির্বাহী ছিলেন আসাদ ওমর। ২০০৯ সালে বিশেষ সেবামূলক কাজের জন্য তাঁকে সিতারা-ই-ইমতিয়াজ পুরস্কার দেওয়া হয়। সিন্ধু প্রদেশের ৩২তম গভর্নর পাকিস্তান মুসলিম লিগের মোহাম্মদ জুবায়েরের ছোট ভাই ওমর।

শেখ রশিদ আহমেদ:
শেখ রশিদ আহমেদ:

শেখ রশিদ আহমেদ: আওয়ামী মুসলিম লিগের প্রধান শেখ রশিদ আহমেদ রেলমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। পাকিস্তানের সাধারণ পরিষদে ১৯৮৫ সালে তিনি প্রথম নির্বাচিত হন। আরও ছয়বার পুনর্নির্বাচিত হয়ে তিনি রেকর্ড করেন। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন রশিদ আহমেদ।

জুবাইদা জালাল
জুবাইদা জালাল

জুবাইদা জালাল: প্রতিরক্ষা উৎপাদনবিষয়ক মন্ত্রী হবেন জুবাইদা জালাল। বেলুচিস্তান আওয়ামি পার্টির সদস্য তিনি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজের মন্ত্রিসভায় জালাল শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষা খাতে অবদানের জন্য ১৯৯৩ সালে তাঁকে প্রাইড অব পারফরমেন্স অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।

ফাওয়াদ চৌধুরী
ফাওয়াদ চৌধুরী

ফাওয়াদ চৌধুরী: পিটিআইয়ের মুখপাত্র ফাওয়াদ চৌধুরী তথ্য, সম্প্রচার ও জাতীয় ঐতিহ্যবিষয়ক মন্ত্রী হবেন। চৌধুরী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির মন্ত্রিসভার তথ্য ও রাজনৈতিক বিষয়ের বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফের মন্ত্রিসভার রাজনৈতিক ঘটনাবলিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ছিলেন।

ফাহমিদা মির্জা
ফাহমিদা মির্জা

ফাহমিদা মির্জা: অভ্যন্তরীণ প্রাদেশিক সমন্বয়কবিষয়ক মন্ত্রী হবেন গ্র্যান্ড ডেমোক্রেটিক জোটের ফাহমিদা মির্জা। ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ১৮তম স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ফাহমিদা। তিনি মুসলিম বিশ্বের পার্লামেন্টের প্রথম নারী স্পিকার।

খালিদ মকবুল সিদ্দিক
খালিদ মকবুল সিদ্দিক

খালিদ মকবুল সিদ্দিক: পাকিস্তানের তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকমিউনিকেশনবিষয়ক মন্ত্রী হবেন খালিদ মকবুল সিদ্দিক। ২০১৩ সালের জুন মাস থেকে এ বছরের মে মাস পর্যন্ত তিনি সাধারণ পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

শিরিন মেহেরুননিসা মাজারি
শিরিন মেহেরুননিসা মাজারি

শিরিন মেহেরুননিসা মাজারি: মানবাধিকারবিষয়ক মন্ত্রী হবেন শিরিন মেহেরুননিসা মাজারি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। দ্য নেশন পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালে সেখান থেকে সরে গিয়ে তিনি পিটিআইয়ে যোগ দেন।

শাফকাত মাহমুদ
শাফকাত মাহমুদ

শাফকাত মাহমুদ: শিক্ষা ও ঐতিহ্যবিষয়ক মন্ত্রী হবেন শাফকাত মাহমুদ। ২০১৩ সালের জুন মাস থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত তিনি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আমির মেহমুদ কায়ানি
আমির মেহমুদ কায়ানি

আমির মেহমুদ কায়ানি: স্বাস্থ্যসেবা নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়বিষয়ক মন্ত্রী হবেন আমির মেহমুদ কায়ানি।

চৌধুরী তারিক বশির শিমা: পাকিস্তানের স্টেট অ্যান্ড ফ্রন্টিয়ার রিজনবিষয়ক মন্ত্রী হবেন চৌধুরী তারিক বশির শিমা। তিনি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারপারসন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

নূর-উল-হক কাদেরি: ধর্ম এবং আন্তধর্মীয় ঐক্যবিষয়ক মন্ত্রী হবেন নূর-উল-হক কাদেরি।

গুলাম সারওয়ার খান
গুলাম সারওয়ার খান

গুলাম সারওয়ার খান: জ্বালানিমন্ত্রী হবেন গুলাম সারওয়ার খান। ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এবং ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন গুলাম সারওয়ার খান।

এ ছাড়া মোহাম্মদ শেহবাজ আরবাব, আবদুল রাজাক দাউদ, ইশরাত হুসেন, আমিন ইসলাম, জহির-উদ্দিন-বাবর আওয়ানকে তাঁর উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ইমরান খান। তাঁদের মধ্যে শেহবাজ প্রধানমন্ত্রীর সংস্থাপনবিষয়ক, অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ রাজাক বাণিজ্য, বস্ত্র, শিল্প, উৎপাদন ও বিনিয়োগবিষয়ক, ইশরাত প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও নৈতিকতা, আমিন জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক ও জহির-উদ্দিন পার্লামেন্টবিষয়ক উপদেষ্টা হবেন।