প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চান ইমরান

ইমরান খান
ইমরান খান

পাকিস্তানের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ‘সুসম্পর্ক’ বজায় রাখার কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার এক দিন পর গত রোববার প্রথমবারের মতো জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। আর গতকাল সোমবার পাকিস্তানের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেছেন, ভারতের সঙ্গে ‘টানা’ ও ‘নিরবচ্ছিন্ন’ সংলাপ প্রয়োজন।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ঘণ্টাব্যাপী প্রথম টেলিভিশন ভাষণে পাকিস্তানের নতুন সরকারের পররাষ্ট্রনীতি নিয়েও কথা বলেন ইমরান খান। তিনি ভারতসহ প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। সাবেক এই ক্রিকেট তারকা বলেন, ‘সব প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে কাজ করবে পাকিস্তান।’

অর্থনৈতিক সংকটে ভোগা পাকিস্তানকে চাঙা করতে ব্যাপক সরকারি ব্যয় কমানো ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। নিম্নগামী বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ সুসংহত করতে প্রবাসীদের দেশে ফিরে এসে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান তিনি।

‘ইসলামিক কল্যাণ রাষ্ট্র’ হিসেবে দেশ চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইমরান বলেন, ‘অর্থনৈতিক সংকটের আজকের যে অবস্থা, পাকিস্তানের ইতিহাসে এমনটা কখনো দেখা যায়নি।’ সপ্তম শতাব্দীতে মদিনার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় হজরত মোহাম্মদ (সা.) যেসব নীতি প্রয়োগ করেন, সেটাই ইসলামিক কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত।

ইমরান বলেন, ‘আমরা একটি ঋণগ্রস্ত দেশ। আমাদের শিশুদের, গরিব জনগণের ও কৃষকের পেছনে খরচ করার মতো কোনো অর্থ নেই। আমরা আমাদের জনগণকে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি দিতে পারি না।’

সরকারি ব্যয় কমিয়ে তা দিয়ে জনগণকে সহায়তা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত দুটি ছাড়া সব যানবাহন নিলামে তুলে বেচে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ইমরান খান। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ বুলেটপ্রুফ গাড়িও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত ৫২৪ কর্মীর বেশির ভাগকে ছাঁটাই করার কথাও বলেন তিনি। কৃচ্ছ্রসাধনের এই নীতি একটি উদাহরণ হিসেবে দেখে তা সব সরকারি দলের নেতা ও কর্মকর্তাকে প্রয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

পাকিস্তানে দুর্নীতিবিরোধী প্রচারণার মাধ্যমে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তরুণ ভোটার ও ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকা মধ্যবিত্ত শ্রেণির মন জিতে ইমরান ক্ষমতায় এসেছেন বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকেরা। তবে বিরোধীরা ইমরানের জয়ের পেছনে পাকিস্তানের প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর হাত আছে বলে অভিযোগ করেছেন।