জার্মানির কেমনিজ শহরে অভিবাসীদের ওপর নব্য নাৎসিদের হামলা

জার্মানির কেমনিজ শহরে নব্য নাৎসিদের রুখতে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
জার্মানির কেমনিজ শহরে নব্য নাৎসিদের রুখতে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

জার্মানির পূর্বাঞ্চলে সাক্সেন রাজ্যের কেমনিজ শহরে অভিবাসীদের ওপর হামলা চালিয়েছে নব্য নাৎসিরা। স্থানীয় সময় রোববার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হামলা চালায় ও হাঙ্গামা করে তারা।

গত শনিবার গভীর রাতে কেমনিজ শহরে ছুরিকাঘাতে একজনের মৃত্যুর ঘটনার পর রোববার কেমনিজ শহরজুড়ে অভিবাসীদের ওপর এই হামলা চালায় নব্য নাৎসিরা। শনিবারের ছুরিকাঘাতের ঘটনায় ৩৫ বছরের এক রুশ বংশোদ্ভূত জার্মান হাসপাতালে মারা যান এবং দুজন আহত হয়েছেন।

রোববার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জার্মান পার্লামেন্টের বিরোধী দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) শহরের কেন্দ্রস্থল কার্ল মার্ক্স স্মৃতিসৌধের কাছে জমায়েতের ডাক দেয়। জার্মানির বর্ণবাদী ও রক্ষণশীল দলটির জমায়েত শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও জমায়েত শেষে তাঁরা নানা রকম অভিবাসীবিদ্বেষী স্লোগান দিয়ে নগর মেলার দিকে এগিয়ে যায়। অভিবাসীবিদ্বেষী ৮০০ থেকে ১ হাজার লোকের এই মিছিল থেকে পরে শহরটির নানা স্থানে অভিবাসীদের দেখামাত্রই মারধর ও নাজেহাল করা হয়েছে।

কেমনিজ শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রুশ বংশোদ্ভূত জার্মানের মৃত্যুর ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মূল আসামিকে এখন গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা কোন দেশের নাগরিক, পুলিশ তা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

এই দাঙ্গা-হাঙ্গামার ঘটনার পর নগরমেলা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরটির মেয়র বারবারা লুদভিগ বলেন, শনিবারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার শহরজুড়ে অভিবাসীদের ওপর হামলা ও আতঙ্ক সৃষ্টির মতো লজ্জাজনক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, জার্মানির পূর্বাঞ্চলের সাক্সেন রাজ্যটি কয়েক বছর থেকেই নব্য নাৎসি এবং রক্ষণশীল রাজনৈতিক দল এএফডি বিশাল সমর্থক গোষ্ঠী নিয়ে প্রভাব খাটিয়ে আসছে।

কেমনিজের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সোমবার সকালে জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টেফার্ন সাইবার্ট বলেছেন, আইন নিজ হাতে তুলে নেওয়ার বিষয়ে এবং প্রকাশ্য রাস্তায় অভিবাসীবিদ্বেষী কার্যকলাপ কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। নব্য নাৎসিরা আরও যাতে মিছিলের আয়োজন করতে না পারে, সে জন্য পুলিশ আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে।

এই ঘটনায় জার্মানির সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত মতামতে বলা হয়েছে, জার্মানির শাসনতন্ত্রে নব্য নাৎসির বর্ণবাদ, শরণার্থী বা জাতিবিদ্বেষী রাজনীতির কোনো স্থান নেই।