মধ্যপ্রাচ্য অস্থিতিশীল হবে, যুক্তরাষ্ট্রকে তুরস্কের অর্থমন্ত্রী

তুরস্কের মুদ্রা ‘লিরা’। ছবি: রয়টার্স
তুরস্কের মুদ্রা ‘লিরা’। ছবি: রয়টার্স

ডলারের বিপরীতে লিরার দরপতনে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছেন তুরস্কের অর্থমন্ত্রী বেরাট আলবাইরাক। তিনি বলেন, লিরার মান কমার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে।

মঙ্গলবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের এক বৈঠক শেষে আলবাইরাক এ সতর্কতা জারি করেন। তিনি বলেন, তুরস্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বিধি আরোপ মূলত আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদকে উসকে দেবে আর অভিবাসন সমস্যাকে গভীর কর তুলবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, এ পরিস্থিতিতে আলবাইরাক ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে তুরস্কের বাণিজ্যচুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুরস্কের মন-কষাকষির ফলে এ বছর ডলারের বিপরীতের লিরার দরপতন হয়েছে ৩৮ শতাংশ। মঙ্গলবার ডলারের বিপরীতে লিরার মূল্যমান ছিল ৬ দশমিক ২০, যা তার আগের দিন সোমবার ছিল ৬ দশমিক ১২।

এ মাসের প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তুরস্কের ওপর যে অর্থনৈতিক বিধি আরোপ করেন, তা মূলত দুটি পণ্যের ওপর। এ দুটি পণ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিকৃত তুরস্কের অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিল। ট্রাম্প এই দুটি পণ্যের ওপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করেন। এর ফলে তুরস্কের রপ্তানি আয় কমে যায়। পক্ষান্তরে বেড়ে যায় আমদানি ব্যয়। দরপতন হয় লিরার।

যুক্তরাষ্ট্রের এই অর্থনৈতিক বিধি আরোপের পেছনে রয়েছে ভিন্ন কারণ। মনে করা হয়, এই বিধি আরোপের সূত্রপাত তুরস্কে বসবাসরত খ্রিষ্টান ধর্মযাজক এন্ড্রু ব্রানসনকে নিয়ে। কারণ ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে তুরস্কে যে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান হয়েছিল, তাতে এন্ড্রু ব্রানসনও জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ। এ অভিযোগে তুরস্কের সরকার ব্রানসনকে গ্রেপ্তারও করে। পরে আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠান এবং সর্বশেষ গৃহবন্দীর আদেশ দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান সত্ত্বেও ব্রানসনের জামিন না দেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে তুরস্কের দুই মন্ত্রীর ওপর প্রথমে অবরোধ আরোপ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পরের সপ্তাহেই অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিল পণ্যের ওপর এই শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দেন ট্রাম্প।