বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুবকের ৩০ বছরের জেল

নাইমুর জাকারিয়াকে ছদ্মবেশী গোয়েন্দা সদস্যের দেওয়া ভুয়া বোমা।
নাইমুর জাকারিয়াকে ছদ্মবেশী গোয়েন্দা সদস্যের দেওয়া ভুয়া বোমা।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-কে হত্যা পরিকল্পনার অভিযোগে আটক সেই যুবককে ৩০ বছরের জেল দিয়েছেন দেশটির আদালত। আজ শুক্রবার লন্ডনের ওল্ড বেইলি আদালত এ সাজা ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ২০ বছর বয়সী নাইমুর জাকারিয়া রহমান। গত ১৯ জুলাই একই আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেন। জাকারিয়া আদালতে নিজেকে ‘বাংলাদেশি-ব্রিটিশ’ বলে পরিচয় দিয়েছিলেন।

২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর নাইমুল জাকারিয়া রহমানকে লন্ডন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে উত্থাপিত অভিযোগে বলা হয়, নাইমুর জাকারিয়া রহমান আত্মঘাতী বোমা ফাটিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের বাসভবনে প্রবেশের পরিকল্পনা নেন। এরপর তিনি ছুরি মেরে বা গুলি করে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করার ছক এঁকেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি মোহাম্মদ আকিব ইমরান (২১) নামের অপর এক তরুণকে সন্ত্রাসবাদে জড়াতে সাহায্য করেন। ইমরান জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসে যোগ দিতে একাধিকবার লিবিয়ায় পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

নাইমুর জাকারিয়াকে ছদ্মবেশী গোয়েন্দা সদস্যের দেওয়া ভুয়া আত্মঘাতী জ্যাকেট।
নাইমুর জাকারিয়াকে ছদ্মবেশী গোয়েন্দা সদস্যের দেওয়া ভুয়া আত্মঘাতী জ্যাকেট।

মোহাম্মদ আকিব ইমরানকে সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ করার দায়ে নাইমুরকে ৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওই ৩০ বছরের সঙ্গেই এই ছয় বছরের সাজার হিসাব হবে।

সাজা ঘোষণাকালে বিচারক হ্যাডন কেইভ বলেন, ‘রহমানকে যদি গ্রেপ্তার করা না হতো তাহলে তিনি ঠিকই ওই হামলা চালাতেন।’

নাইমুর জাকারিয়া উত্তর লন্ডনের বাসিন্দা। সিরিয়ার জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসে যোগ দেওয়া এক চাচার প্ররোচনায় তিনি উগ্রবাদী হয়ে ওঠেন বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে। নাইমুর গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই ওই চাচা সিরিয়ায় মারা যান বলে ধারণা।

সাজাপ্রাপ্ত নাইমুর জাকারিয়া রহমান।
সাজাপ্রাপ্ত নাইমুর জাকারিয়া রহমান।

বিবিসির খবরে বলা হয়, মেট্রোপলিটন পুলিশ, এমআই৫ এবং এফবিআই যৌথ ছকে এঁকে নাইমুর জাকারিয়া রহমানকে গ্রেপ্তার করে। একজন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা সদস্যের কাছ থেকে একটি ব্যাগ সংগ্রহ করার পরপরই নাইমুর জাকারিয়া রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ব্যাগে একটি ভুয়া বোমা ও ভুয়া বিস্ফোরক লাগানো একটি জ্যাকেট ছিল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইএসের একজন নিয়োগদাতার (রিক্রুটারের) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রকৃতপক্ষে ওই ব্যক্তি ছিল এফবিআইয়ের লোক। ওই গোয়েন্দা নাইমুরকে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৫-এর একজন সদস্যের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করিয়ে দেন। এমআই৫-এর কর্মী নাইমুরকে বোঝাতে সক্ষম হন যে তাঁরা আইএসের লোক। তখন নাইমুল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে হত্যায় আত্মঘাতী হামলা চালানোর ইচ্ছার কথা জানান।