কেমনিজে বর্ণবাদবিরোধী কনসার্ট

‘ইউ আর মোর’ শীর্ষক বর্ণবাদবিরোধী মিউজিক কনসার্টে দর্শক ও শ্রোতাদের জমায়েত। ছবি: সংগৃহীত
‘ইউ আর মোর’ শীর্ষক বর্ণবাদবিরোধী মিউজিক কনসার্টে দর্শক ও শ্রোতাদের জমায়েত। ছবি: সংগৃহীত

জার্মানির কেমনিজ শহরে ‘ইউ আর মোর’ শীর্ষক বর্ণবাদবিরোধী মিউজিক কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে হাজার হাজার মানুষ অংশ নিয়ে কেমনিজ শহরে চলমান বর্ণবাদী ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে। সোমবার শহরের কেন্দ্রে জোহায়ান চার্চের সামনে কনসার্টের মঞ্চ ঘিরে পার্ক ও এর আশপাশের এলাকায় মানুষের ঢল নামে।

জার্মানির পাঙ্ক ব্যান্ড বলে খ্যাত জনপ্রিয় টোটে হোসে, ফাইনে ফিলে ফিস ফিলেট ও কেমনিজ শহরের ব্যান্ড ক্যার্ফ্ট ক্লাব এই কনসার্টের আয়োজন করে। সর্বোচ্চ ৪০ হাজার শ্রোতা-দর্শক আশা করলেও, সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে বলে জানাচ্ছেন আয়োজকেরা।

জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ার ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস এই কনসার্টের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। গত দুই সপ্তাহ থেকে কেমনিজ শহরে চলমান নব্য নাৎসি ও কট্টরবাদীদের নানা রকম সহিংস ঘটনার বিরুদ্ধে এই প্রথম শহরটিতে বিশাল জমায়েত অনুষ্ঠিত হলো। কনসার্টে তিনটি ব্যান্ড দলের সদস্যরা চার ঘণ্টা ধরে সংগীত পরিবেশন করেন। ব্যান্ড দলের সদস্যদের পক্ষ থেকে টোটে হোসে ব্যান্ডের গায়ক আন্দ্রিয়াস ফের্গে ওরফে ক্যাম্পিনো বলেন, এই কেমনিজ শহর বা জার্মানির যেখানেই কট্টরবাদীদের আস্ফালন দেখা যাবে, সেখানেই তাঁরা যাবেন এবং গান গেয়ে তার প্রতিবাদ করবেন।

এই কনসার্টের দুদিন আগেই জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস জনগণকে নাৎসিবাদীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। কনসার্ট-সংলগ্ন এলাকায় কেমনিজের কট্টরবাদী সংগঠন ‘প্রো কেমনিজ’ জমায়েত করতে চাইলেও পুলিশ তাদের অনুমতি দেয়নি।

গত ২৫ আগস্ট গভীর রাতে কেমনিজ শহরের কেন্দ্রে নগরমেলায় ছুরিকাঘাতের ঘটনায় ৩৫ বছর বয়সের এক কিউবান বংশোদ্ভূত জার্মান নিহত হন। আহত হন অপর দুজন। এই ঘটনায় একজন সিরীয় ও একজন ইরাকিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

ওই ঘটনার পর থেকে জার্মান পার্লামেন্টের বিরোধী দল অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) ও ইসলামবিরোধী পেগিডা আন্দোলনের সমর্থকেরা শহরের কেন্দ্রস্থল কার্ল মার্ক্স স্মৃতিসৌধের কাছে কয়েক দিন ধরেই জমায়েতের ডাক দিচ্ছেন। জার্মানির বর্ণবাদী ও রক্ষণশীল এই দলটির নেতা ও সমর্থকদের ইন্ধনে কয়েক দিন ধরেই কেমনিজ শহরে সাংবাদিক, টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান, অন্য মতের রাজনীতিক ও অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সহিংস হামলা এবং নাজেহালের ঘটনা ঘটেছে।