শহিদুল আলমের মুক্তির জন্য যুক্তরাজ্যের ভূমিকা কী?

আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। ফাইল ছবি
আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। ফাইল ছবি

বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের বন্দিদশা নিয়ে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে প্রশ্ন তুলেছেন দেশটির এমপি রূপা হক। গতকাল মঙ্গলবার হাউস অব কমন্সের নিয়মিত অধিবেশনে তিনি জানতে চান, প্রখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের মুক্তির জন্য যুক্তরাজ্য সরকার কী ভূমিকা রাখছে?

শহিদুল আলমকে যে আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেই আইন যে বাংলাদেশের একসময়কার সক্রিয় সুশীল সমাজকে শেষ করে দিচ্ছে, সে বিষয় বন্ধুরাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ারও অনুরোধ জানান রূপা হক।

পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ-বিষয়ক নির্ধারিত বিতর্কে উপস্থিত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী অ্যালান ডানকানকে রূপা হক বলেন, ‘বাংলাদেশে কারাবন্দী এবং নির্যাতনের শিকার আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের মুক্তির জন্য যুক্তরাজ্য সরকার কী করছে? যাঁর মামলা নিয়ে শ্যারন স্টোন ও ১০ জন নোবেল বিজয়ী (প্রকৃতপক্ষে ১১ জন) কথা বলেছেন। তিনি ওই দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে আটক ৭০০ মানুষের একজন, যে আইনকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে সরকারের সমালোচকদের কণ্ঠরোধের হাতিয়ার। এই আইনে অপরাধের ন্যূনতম সাজা সাত বছরের কারাদণ্ড এবং বিচার বিভাগ নিরপেক্ষ নয়। প্রতিমন্ত্রী কি বন্ধুরাষ্ট্রটিকে এই বার্তা পৌঁছে দেবেন যে নির্মম এ আইন (ড্রাকোনিয়ান ল) বাংলাদেশের একসময়কার সক্রিয় সুশীল সমাজকে শেষ করে দিচ্ছে?’

আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের মুক্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দেয়ালে আঁকা হয়েছে এই দেয়ালচিত্র। ফুলার রোড, ঢাকা, ৪ সেপ্টেম্বর। ছবি: আবদুস সালাম
আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের মুক্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দেয়ালে আঁকা হয়েছে এই দেয়ালচিত্র। ফুলার রোড, ঢাকা, ৪ সেপ্টেম্বর। ছবি: আবদুস সালাম

জবাবে পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী অ্যালান ডানকান বলেন, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগের (ডিএফআইডি) প্রতিমন্ত্রী অ্যালেস্টেয়া রবার্ট গত সপ্তাহে বাংলাদেশ সফরকালে বিষয়টি সরাসরি তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সাধ্যমতো বিষয়টি নিয়ে জোরালো ভূমিকা রাখছেন।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রূপা হক লন্ডন শহরের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড একটন আসনের এমপি। তিনি লেবার-দলীয় রাজনীতিক। গত ১৩ আগস্ট এক বিবৃতিতে তিনি শহিদুল আলমের মুক্তি দাবির পাশাপাশি বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান। আলাদা বিবৃতিতে একই ধরনের আহ্বান জানান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আরেক এমপি রুশনারা আলী। গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকও এক বিবৃতিতে অবিলম্বে শহিদুল আলমের মুক্তি দাবি করেন। বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসনের এমপি। তিনিও লেবার-দলীয় রাজনীতিক।