ইদলিবের আকাশে রুশ যুদ্ধবিমান

সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের কারণে হাজার হাজার মানুষ গৃহহারা। ছবি: এএফপি
সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের কারণে হাজার হাজার মানুষ গৃহহারা। ছবি: এএফপি

সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। ইদলিবে অভিযান ঠেকাতে গতকাল শুক্রবার ইরানের রাজধানী তেহরানে ইরান, তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে বৈঠক হয়। এতে অভিযান বন্ধে আপত্তি জানান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

বিবিসির খবরে জানা যায়, সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, ইদলিবের ‘সন্ত্রাসী’ অধ্যুষিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। সিরীয় বাহিনীকে সমর্থন দিচ্ছে রাশিয়া ও ইরান। সিরিয়ার বিদ্রোহীদের শেষ বড় ঘাঁটি ইদলিবে তারা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তুরস্ক ও কয়েকটি দেশ সেখানে মানবিক বিপর্যয় হবে বলে সতর্কতা জারি করেছে।

ইদলিবে গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর কয়েক হাজার মানুষ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওতে দেখা যায়, আল-ডানা এলাকায় এক বিক্ষোভকারী জাতিসংঘের কাছে সিরীয়দের হত্যা বন্ধের দাবি জানায়।

সিরীয় অবজারভেটরির প্রধান রামি আবদুল রহমান বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এবং আহরার আল শাম গোষ্ঠীর অবস্থান লক্ষ্য করে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান আঘাত হেনেছে। জাতিসংঘ এইচটিএসকে ‘সন্ত্রাসী’ দল হিসেবে চিহ্নিত করেছে। জাতিসংঘের হিসাবে ইদলিবে এইচটিএসের ১০ হাজার সদস্য রয়েছে।

এইচটিএস এবং সিরিয়ার বিদ্রোহী দলগুলোকে সমর্থন দেয় প্রতিবেশী তুরস্ক। তুরস্ক বলেছে, তারা এই হামলার জবাব দেবে।

গতকাল রাশিয়া, ইরান ও তুরস্কের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইদলিবে যুদ্ধবিরতির জন্য তুরস্কের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন। ইদলিবে ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে অভিযান চলবে বলে সাফ জানান পুতিন।

সিরিয়ার বিদ্রোহী কয়েকটি দলকে দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন দিয়ে আসছে তুরস্ক। দেশটির আশঙ্কা, এই অভিযানে দক্ষিণ সীমান্তে বড় ধরনের শরণার্থী-সংকট হবে।

তবে রাশিয়া ও ইরান বলছে ইদলিব থেকে ‘সন্ত্রাসী’ দলগুলোকে সরিয়ে দিতে হবে।

ইদলিবই সিরিয়ার বিদ্রোহী দলগুলোর শেষ শক্ত ঘাঁটি। সাত বছর ধরে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সরানোর চেষ্টা করছে বিদ্রোহী দলগুলো।

ইদলিব বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী দলের নিয়ন্ত্রণে। এর মধ্যে একটি জোটের সঙ্গে সন্ত্রাসী দল আল-কায়েদার সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট গোষ্ঠীকে সমর্থন দিচ্ছে তুরস্ক। ইদলিবে প্রায় ৩০ হাজার বিদ্রোহী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

জাতিসংঘ বলছে, ইদলিবে ২০ লাখের বেশি লোক বাস করে।