মেয়ে পড়তে যাবেন ইউকেতে, বাড়ি কেনাসহ ১২ জন পরিচারিকা নিয়োগ ভারতীয় কোটিপতি বাবার

মেয়ে পড়বেন বিদেশে। এ জন্য কেনা হয়েছে বাড়ি। পড়াশোনা করতে যেন অসুবিধা না হয়, এ জন্য ১২ জন সহযোগী মেয়ের সঙ্গে থাকবেন। এ কাজের জন্য দেওয়া হয়েছিল বিজ্ঞাপন। প্রত্যেকের মাসে বেতন আড়াই হাজার পাউন্ড। ওই শিক্ষার্থীর চার বছরের পড়াশোনার জন্য এমন অনেক কিছু্ই করছেন ভারতীয় কোটিপতি বাবা।

এক ভারতীয় কোটিপতির তরুণী কন্যা এ মাসেই ভর্তি হয়েছেন স্কটল্যান্ডের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিলাসবহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত মেয়েকে যেন কোনো অসুবিধায় পড়তে না হয়, তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই কেনা হয়েছে প্রাসাদসম বাড়ি। বাড়ির ব্যবস্থাপক, বাসার তত্ত্বাবধায়ক, বাগানের মালি, গাড়িচালক, ভারতীয় খাবার রান্নায় অভ্যস্ত শেফসহ ১২ জন তাঁর জন্য সার্বক্ষণিক ব্যস্ত থাকবেন ওই বাড়িতে। তাঁদের পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ। মেয়ের যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, এত আয়োজন সে জন্যই। এসব কারণে ইতিমধ্যেই ওই শিক্ষার্থী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছেন। একসময় এ বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়েছেন ডিউক ও ডাচেস অব কেমব্রিজ প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট মিডিলটন। কিন্তু উইলিয়ামও আর পাঁচজন পড়ুয়ার মতো সাধারণভাবেই পড়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর পড়বেন ওই শিক্ষার্থী। বিলাসবহুল জীবনে অভ্যস্ত মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে জন্য যাতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে না হয়, এ জন্য এগিয়ে আসে পরিবারই। বাড়ির আদরের মেয়ের কষ্টের কথা চিন্তা করে বিলাসব্যসনের এলাহি কারবার শুরু করে পরিবার। প্রথমেই সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি বিশাল বাড়ি কিনে ফেলেছে পরিবারটি। কারণ, মাঝেমধ্যে সেখানে গিয়ে মেয়েকে সঙ্গ দেবেন মা-বাবা ও ভাই। মেয়ের সহায়তার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে ১২ জনকে।

১২ কর্মী নিয়োগের জন্যই ভারতীয় ধনাঢ্য ওই পরিবার যোগাযোগ করে যুক্তরাজ্যের নামী নিয়োগকারী সংস্থা সিলভার সোয়াইনের সঙ্গে। তারা এ জন্য অনলাইনে একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। বিজ্ঞাপনটির ভাষা ছিল, ‘শহরতলিতে ঘরের কাজের জন্য অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ১২ কর্মী চাই। বেতন বছরে ৩০ হাজার পাউন্ড।’ ভারতীয় রুপিতে ২৮ লাখ। বিজ্ঞাপন প্রচারের সঙ্গে সঙ্গেই সাড়া পড়ে যায়। শুরু হয় আবেদন।

সিলভার সোয়াইনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তাঁরা দ্রুতই বিজ্ঞাপনটি বন্ধ করে দেন। কারণ অনেক আবেদন পড়ছিল।

বিজ্ঞাপনে এ-ও বলা ছিল, ঘরের কাজের নারী কর্মীদের কর্মশক্তিতে ভরপুর, উচ্ছল হতে হবে। ওই নারী কর্মীদের কাজ হবে রুটিন অনুযায়ী অন্য কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, ঘর গোজগাছ করা এবং ওই শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত শপিংয়ে সাহায্য করা। শুধু তা-ই নয়, ঘুম থেকে উঠে ক্লাসে যেতে যেন দেরি না হয়ে যায়, সে জন্য ঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেওয়াটাও নারী কর্মীর কাজের মধ্যে পড়বে।

খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শেফ খুঁজেছে পরিবারটি। বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, ভারতীয়, বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতীয় (দোসা–জাতীয় খাবার) খাবার রান্না করতে জানলেই ইন্টারভিউ দিতে আসবেন। চায়নিজ ও ইতালীয় খাবারদাবার বানানোয়ও দক্ষ হতে হবে শেফকে। এ ছাড়া সাহায্যকারী কর্মীদের দলে থাকছেন একজন মালি, একজন গাড়ির চালক ও একজন খাবার পরিবেশনকারী। তবে ওই কোটিপতি শিক্ষার্থীর কোনো পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি কোনো গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে। তথ্যসূত্র: দ্য সান, হিন্দুস্তান টাইমস ও টিওআই।