উত্তর-পূর্ব ভারতে শরিকেরা সঙ্গ ছাড়ছে বিজেপির?

ত্রিপুরায় জোট সরকারের শরিক দলের সংঘর্ষে জ্বলছে গাড়ি। আগরতলা, ত্রিপুরা, ভারত, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮। ছবি: প্রথম আলো
ত্রিপুরায় জোট সরকারের শরিক দলের সংঘর্ষে জ্বলছে গাড়ি। আগরতলা, ত্রিপুরা, ভারত, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮। ছবি: প্রথম আলো

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তর-পূর্ব ভারতে বিজেপির শরিক দলগুলোয় ক্ষোভ বাড়ছে। ‘হিন্দু অনুপ্রবেশকারীদের’ নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি মানতে নারাজ বিজেপির শরিকেরা। আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরামে বিজেপির জোটসঙ্গীরা জোট ছাড়ার হুমকি দিয়েছে।

গ্রাম দখল নিয়ে শরিকদের মধ্যে সংঘর্ষ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ত্রিপুরায় বিজেপির জোটসঙ্গী আইপিএফটি জানিয়েছে, জোট ছাড়ার বিষয়ে তারা চিন্তাভাবনা শুরু করেছে।

আগামী বছর ভারতের সাধারণ নির্বাচন। তার আগেই উত্তর-পূর্ব ভারতের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোর শরিকি বিবাদ চিন্তায় রেখেছে দলীয় নেতৃত্বকে। ত্রিপুরায় তো রীতিমতো সংঘর্ষ শুরু হয়েছে গ্রাম দখলের লড়াইকে কেন্দ্র করে।

ত্রিপুরায় পঞ্চায়েতের উপনির্বাচন পর্ব শুরু হয়েছে। এই উপনির্বাচন নিয়ে বিরোধী দল সিপিএম ও কংগ্রেসের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের শরিক দল আইপিএফটিও ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছে।

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আইপিএফটি ও বিজেপির সংঘর্ষ লেগেই রয়েছে। আইপিএফটির মুখপাত্র মঙ্গল দেববর্মার অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে হামলা চালাচ্ছে বিজেপি।

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের’ ইঙ্গিতও দিয়েছে আইপিএফটি। জোটে থাকবেন কি না, তা নিয়েও নিজেদের মধ্যে আলোচনা চলছে বলে আইপিএফটির মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানান।

একই ছবি আসামেও। অগপ বিজেপির ওপর ক্ষিপ্ত। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারা একাই লড়বে। এমনকি লোকসভার ভোটেও ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ চায় অগপ।

সাবেক মুখ্যমন্ত্রী, তথা বর্ষীয়ান অগপ নেতা প্রফুল্ল কুমার মহন্ত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে হিন্দুদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা হলে তাঁরা সরকার থেকে বেরিয়ে আসবেন।

মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী, তথা এনপিপির প্রধান কনার্ড সাংমারও সাফ কথা, নিজেদের সংগঠন বাড়ানোই তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। চলতি বছরেই মিজোরামে বিধানসভার ভোট। সেখানে একাই লড়বে এনপিপি।

তবে ত্রিপুরার উপমুখ্যমন্ত্রী, তথা বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা জিষ্ণু দেববর্মা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব ছোটখাটো উত্তেজনা। লোকসভা ভোটের আগেই সব ঠিক হয়ে যাবে। একসঙ্গেই বিরোধীদের পরাস্ত করতে জোটবদ্ধ হয়ে আমরা লড়ব।’

উত্তর-পূর্ব ভারতে লোকসভায় মোট আসন ২৫। এবার বিজেপি বেশির ভাগ আসনেই ভালো ব্যবধানে জিতবে বলে জিষ্ণু দাবি করেন।

তবে জোট জটিলতা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ভাবাচ্ছে বলে জানা গেছে। ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের’ ফলে যেভাবে রক্তাক্ত হচ্ছে গ্রামাঞ্চল, তাতে জোট ভাঙার আশঙ্কা আরও প্রকট হচ্ছে দিন দিন।