ইয়েমেনে দুর্ভিক্ষের ছোবলে ৫০ লাখ শিশু

সানায় জাতিসংঘের কার্যালয়ের সামনে শিশুরা গত আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে বিমান হামলায় হতাহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছে। ওই হামলায় বেশ কিছু শিশু নিহত হয়। ১৮ আগস্ট, ২০১৮। ছবি: রয়টার্স
সানায় জাতিসংঘের কার্যালয়ের সামনে শিশুরা গত আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে বিমান হামলায় হতাহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছে। ওই হামলায় বেশ কিছু শিশু নিহত হয়। ১৮ আগস্ট, ২০১৮। ছবি: রয়টার্স

যুদ্ধ বন্ধ হচ্ছে না। প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ মানুষ। বড়দের এসব প্রাণঘাতী সংঘাতে যাদের বিন্দুমাত্র ভূমিকা নেই, ভোগান্তি বেশি সেই শিশুদের। যুদ্ধের কারণে খাদ্যের দাম বাড়ছে। আবার কমছে ইয়েমেনি মুদ্রার মান। এতে দুর্ভিক্ষে পড়েছে দেশটির অর্ধকোটি শিশু। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন এ শঙ্কার কথা জানিয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সমস্যা শুধু খাদ্য-সংকটেই সীমিত নেই; বড় হুমকি হলো বন্দরনগর হুদাইদা এখনো যুদ্ধপরিস্থিতির মধ্যে আছে। বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এ শহর দিয়েই বেশির ভাগ ত্রাণ আসে। সৌদি-নিয়ন্ত্রিত জোট বাহিনীর সঙ্গে এখানে এসব বিদ্রোহীর জোর লড়াই চলছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জাতিসংঘের উপাত্ত তুলে ধরে বলা হয়েছে, ইয়েমেনে লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে ২৮ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। গৃহহীন হয়েছে ৩০ লাখ মানুষ।

সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, ইয়েমেনের ৫২ লাখ শিশু এখন দুর্ভিক্ষের মুখে। আবার এ সময়ই দেশটির মুদ্রা ইয়েমেনি রিয়ালের মান কমেছে ১৮০ শতাংশ। দেশটির ইতিহাসে এটি সর্বনিম্ন। আর এর ফলে মানুষের ওপর বাড়তি চাপ পড়েছে।

সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী হেলে থরনিং স্মিড বলেছেন, ‘লাখো শিশু জানে না, ওরা পরের বেলার খাবারটা কখন পাবে বা আদৌ পাবে কি না। আমি উত্তর ইয়েমেনের একটি হাসপাতালে গিয়ে দেখেছি, সেখানে শিশুরা ক্ষুধার জ্বালায় এত দুর্বল হয়ে পড়েছে যে ওরা কাঁদতেও পারছে না।’

চলতি মাসের শুরুতে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি বলেছিল, এ বছর তারা চরম পুষ্টিহীনতার শিকার পাঁচ বছরের কম বয়সী চার লাখ শিশুকে চিকিৎসা দিয়েছে। সংস্থাটি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, এ বছর ৩৬ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে।

হেলে থরনিং স্মিড বলেন, ‘যুদ্ধের এই ভয়াবহতা একটি প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। শিশুরা নানা ধরনের হুমকির মুখে পড়েছে। ওরা বোমার হুমকির মুখে পড়েছে, ওরা ক্ষুধার জ্বালায় কাতর হচ্ছে, ওরা নিরাময়যোগ্য রোগ যেমন কলেরায় আক্রান্ত হচ্ছে।’