আবার অশান্ত হবে দার্জিলিং?

পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ি শহর দার্জিলিং। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ি শহর দার্জিলিং। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ি শহর দার্জিলিং আবার অশান্ত হয়ে ওঠার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গতকাল বুধবার আত্মগোপনে থাকা এ অঞ্চলের নেতা বিমল গুরুং এক অডিও বার্তায় পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য গঠন করার জন্য ফের দার্জিলিংবাসীর প্রতি ডাক দিলে শুরু হয় দার্জিলিংজুড়ে শঙ্কা। গত মঙ্গলবার গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে দার্জিলিংয়ে নতুন করে পোস্টার পড়েছে। যদিও প্রশাসন এই হুমকিকে মোবাবিলা করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে।

গত বছর পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে অশান্ত হয়েছিল দার্জিলিং। আন্দোলন শুরু করেছিলেন দার্জিলিংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুং। একটানা ২ মাস ২১ দিন বন্‌ধের পর গত বছরের ৩১ আগস্ট বন্‌ধ প্রত্যাহারের ঘোষণার পর ১ সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে শান্ত হতে থাকে দার্জিলিং। গত বছর পূজার আগে দার্জিলিং শান্ত হলে মানুষও ছুটে গিয়েছিল দার্জিলিং। সেদিন দার্জিলিংয়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে ১২ জুন থেকে শুরু হয় এই অনির্দিষ্টকালের বন্‌ধ। শেষ হয় ৩১ আগস্ট। শেষ মুহূর্তে এই বন্‌ধ সামাল দিতে আসরে নামেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গ ভেঙে কোনো পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য নয়। দার্জিলিংকে থাকতে হবে জিটিএ বা স্বশাসিত গোর্খাল্যান্ড টেরিটরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মধ্যেই। এরপর শুরু হয় জনমুক্তি মোর্চাকে ভাঙার খেলা। জনমুক্তি মোর্চার দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা মদন তামাংকে বাগিয়ে আনেন মমতা। তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় জিটিএর ভার। আর বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে ঘায়েল করা হয়। অগত্যা বিমল গুরুং আত্মগোপন করেন।

সবুজে ছাওয়া দার্জিলিং। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
সবুজে ছাওয়া দার্জিলিং। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

বিমল গুরুং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর পাঠানো অডিও বার্তায় বলেছেন, ‘গত বছর পাহাড়ে বন্‌ধ চলাকালে দুর্গম বন–বস্তিতে খাবার পৌঁছে দিতে গিয়ে চারজন মারা যান। তাঁদের এদিন স্মরণ করা হয়। তবে তাঁরা গোর্খাল্যান্ডের জন্য প্রাণ দিয়েছেন আর তাঁদের স্বপ্ন সত্যিই হবে। যাঁরা টাকার জন্য সরকারের কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন, তাঁদের পাহাড়বাসী ক্ষমা করবেন না। কারণ, গোর্খাল্যান্ডের জন্য বহু মানুষ শহীদ হয়েছেন। তাঁদের জন্যই আমরা পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য চাই।’

এই বিবৃতি দেওয়ার পর পাহাড়ে ফের অশান্তির মেঘ ঘনীভূত হয়েছে। তবে কি আবার অশান্ত হবে পাহাড়, পুজোর আনন্দ মাটি হবে, ইত্যাদি প্রশ্নে জেরবার হচ্ছে পাহাড়। কারণ, ইতিমধ্যে পাহাড়ের সব আবাসিক হোটেল পুজোর ছুটিতে বুকিং হয়ে গেছে।