একজন হাসিখুশি মানুষের গল্প

ছুটি কাটানোর সময় স্ত্রী ডেনিসের সঙ্গে গর্ডন হারমান। ছবি: বিবিসি থেকে নেওয়া
ছুটি কাটানোর সময় স্ত্রী ডেনিসের সঙ্গে গর্ডন হারমান। ছবি: বিবিসি থেকে নেওয়া

হারমান গর্ডন পেশায় ঝাড়ুদার। কাজ করেন যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটিতে। ১২ বছর ধরে তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পেশায় নিয়োজিত। কিন্তু যে গুণটি তাঁকে গণমাধ্যমের খবরে পরিণত করেছে তা হলো, কর্মক্ষেত্রে সদা হাসিখুশি থাকা।

বিবিসি জানিয়েছে, গল্পটি চলতি বছরের মে মাসের। ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির স্বীকৃত ফেসবুক পেজে হারমানকে নিয়ে একটি পোস্ট দেওয়া হয়, যেখানে তাঁকে ‘সবচেয়ে প্রফুল্ল মনের মানুষ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই পোস্টের পর সূচনা হয় আরেক গল্পের।

হারমানকে নিয়ে ওই পোস্ট দেখার পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়টির মেডিসিন বিভাগের শিক্ষার্থী হাদি আল-জুবাইদি আরেকটি পোস্ট দেন, যেখানে হারমানের জন্য অর্থ সংগ্রহের ঘোষণা দেওয়া হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে ২৩০ জন শিক্ষার্থী অর্থ দান করেন। এতে দেড় হাজার পাউন্ড তথা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়। পরে ওই অর্থ তুলে দেওয়া হয় হারমান ও তাঁর স্ত্রী ডেনিসের হাতে।

হারমানের প্রতি শিক্ষার্থীদের এই ভালোবাসা তৈরি করে আরেকটি গল্পের। কারণ জ্যামাইকান এই নাগরিক গত ১০ বছরে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে নিজ দেশে যেতে পারেননি। শিক্ষার্থীদের এই অর্থে তিনি এক সপ্তাহের জন্য নিজ দেশে গেছেন। পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন। সেখানেও সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি গল্পের। গল্পটি হারমানের মুখ থেকেই শোনা যাক।

হারমান বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমি দেশে থাকার সময় পাঁচ তারকা হোটেলেও ছিলাম। আমাদের ২৩তম বিবাহবার্ষিকী কাটিয়েছি হোটেলে। যখন হোটেলে ছিলাম তখন আশপাশের মানুষ ভাবত, আমি হাজার কোটিপতি।’

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, হারমানের এই ভ্রমণ নিয়ে কয়েক দিন আগে ব্রিস্টলের ফেসবুকে আবার একটি পোস্ট দেওয়া হয়, যেখানে তাঁর দেশে যাওয়ার কথা নিশ্চিত করা হয়। পাশাপাশি বলা হয় ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে হারমান তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে পাঁচ তারকা রিসোর্টে ছুটি কাটিয়েছেন। সেখানে একসঙ্গে তাঁদের ২৩তম বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন।’

হারমানকে বিশ্ববিদ্যালয়টির অনেকেই দেখেন সবচেয়ে সুখী মানুষ হিসেবে। এক শিক্ষার্থীর মন্তব্য, ‘যদি কেউ সুখী মানুষ দেখতে চান তাহলে হাসিখুশি হারমানের কাছে গিয়ে দু-এক মিনিট সময় ব্যয় করে আসুন।’