ছেলে নামের কলঙ্ক!

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

সদ্য কৈশোর পেরোনো ছেলেটা বখে যাচ্ছিলেন বুঝতে পারছিলেন বাবা-মা। সব সময়ই তাঁকে বোঝাচ্ছিলেন। তবে এতেও কোনো কাজ হচ্ছিল না। পড়াশোনা না করা, কলেজ পালানো, সময় নষ্ট করে সারা দিন ঘুড়ি ওড়ানো চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। ধৈর্যের বাঁধ ভেড়ে যাওয়ায় একদিন বেশ বকাঝকা করলেন ছেলেকে। সেই রাগ পুষে বাবা, মা আর বোনকে হত্যা করলেন ছেলে।

নৃশংস এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের দিল্লিতে। গতকাল বুধবার মা-বাবা ও কিশোরী বোনকে হত্যার দায়ে ১৯ বছরের সুরুজ ভার্মাকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসায় সুরুজ জানান হত্যার লোমহর্ষক কাহিনি।

এনডিটিভি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, পড়াশোনা না করায় এবং কলেজে ঠিকমতো না যাওয়ায় প্রায়ই সুরুজকে বকাঝকা করতেন বাবা মিথিলেশ ভার্মা। গত ১৫ আগস্ট পড়াশোনা বাদ দিয়ে ছেলেকে ঘুড়ি ওড়াতে দেখে বেশ খেপে যান তিনি। হালকা মারধরও করেন। এই রাগ পুষে রেখে বাবাকে শাস্তি দেবেন বলে ঠিক করেন সুরুজ।

গত মঙ্গলবার বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যান সুরুজ। বাড়ি ফেরার পথে ছুরি ও দুটি কাঁচি কিনে নিয়ে আসেন তিনি। ওই দিন পুরো সন্ধ্যাটা বাবা, মা ও বোনের সঙ্গে গল্প করেন তিনি। ছোটবেলার ছবি দেখে বেশ স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন সবাই। রাতে খেয়েদেয়ে সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। দিবাগত রাত তিনটার দিকে শয়নঘরে ঢুকে ঘুমন্ত বাবাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন সুরুজ। মাকেও আঘাত করেন। এরপর পাশের ঘরে শুয়ে থাকা ১৫ বছরের বোনকে হত্যা করেন তিনি। এ সময় আহত মা উঠে এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাঁকে আবার ছুরিকাঘাত করেন সুরুজ। তিনজনকে হত্যার পর প্রতিবেশীদের ডাক দেন সুরুজ। তাঁদের জানান, বাড়িতে ডাকাত পড়েছিল।

খবর পেয়ে পুলিশ আসে। তিনটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে ডাকাতেরা অথচ মূল্যবান কিছু খোয়া যায়নি—এমন ঘটনায় পুলিশের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মা-বাবা ও বোনকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন সুরুজ।

পরে ফরেনসিক তদন্তে বের হয়ে আসে বাথরুমে নিজের রক্তাক্ত পায়ের ছাপ। ছুরিও পরিষ্কার করেছেন সুরুজ। এর আগে তিনি অপহৃত হওয়ার ঘটনা সাজিয়েছিলেন। তবে তা ভেস্তে যায়। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ায় প্রায়ই তাঁকে বকাঝকা করতেন বাবা।