দিল্লিতে বাংলাদেশি শিল্পীদের প্রথম প্রদর্শনী 'দ্য হোপ'

দিল্লিতে বাংলাদেশি শিল্পীদের প্রদর্শনী ‘দ্য হোপ’–এ ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী ও প্রেস মিনিস্টার ফরিদ আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
দিল্লিতে বাংলাদেশি শিল্পীদের প্রদর্শনী ‘দ্য হোপ’–এ ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী ও প্রেস মিনিস্টার ফরিদ আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

বর্ষা বিদায়ের পর হিমের পরশ মাখা বাতাসে যখন উৎ​সব শুরুর ঘোষণা, সেই সন্ধিক্ষণে ভারতের রাজধানীতে বাংলাদেশের তিন নারী শিল্পীর ক্যানভাস মেলে ধরল বাঙালি রমণীর আবেগঘন জীবনবোধ। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় অল ইন্ডিয়া ফাইন আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফটস সোসাইটির (আইফ্যাক্স) কক্ষে ঝলমলিয়ে উঠল সেই প্রদর্শনী, ‘দ্য হোপ’। সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের জন্য রাজধানী দি​ল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত আর্টিস্ট রিলেশনস গ্রুপের এটাই প্রথম প্রদর্শনী।

তিন শিল্পী সমসাময়িকই শুধু নন, একই আর্থসামাজিক পরিবেশে লালিত। যদিও তিনজনের কাজ ও দৃষ্টিভঙ্গী আলাদা। জেবুন নাহার নঈমের চোখে নারী যেমন ধরা দিয়েছে, তেমনই এসেছে প্রকৃতি কিংবা পক্ষীকুল। সেই দেখার চোখে পুরুষ যে ব্রাত্য তা নয়, কিন্তু নারীর প্রাধান্য প্রশ্নাতীত। তাঁর ছবি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বন্ধনমুক্ত। পরিবেশে ফুটে উঠেছে গ্রাম ও নগরজীবন। চিত্রিত হয়েছে কঠিন লড়াই ও অবিরাম চড়াই-উতরাই পেরোনো নারীর জয়ের কাহিনি।

প্রদর্শনী ‘দ্য হোপ’-এর তিন শিল্পী সমসাময়িকই শুধু নন তিনজনের কাজ ও দৃষ্টিভঙ্গী আলাদা। ছবি: সংগৃহীত
প্রদর্শনী ‘দ্য হোপ’-এর তিন শিল্পী সমসাময়িকই শুধু নন তিনজনের কাজ ও দৃষ্টিভঙ্গী আলাদা। ছবি: সংগৃহীত

রুবিনা আখতারের ক্যানভাস যেন যাপিত জীবন। চরাচরে জেগে থাকা আশা ও স্বাধীনতার বিচ্ছুরণ তাঁর প্রতিটি রেখায়। নারী-সত্তার প্রাধান্য তাঁর কাজেও। সেই নারীর অবয়বের প্রতিটি রেখা যেন এক একটি পৃথক গল্প। কালি ও কলমের ছোঁয়ায় রুবিনা সৃষ্টি করেছেন এক অভিনব দ্যোতনা। সেই অনুভূতি আনন্দের, সাফল্যের।
এলহাম হক শুরু থেকেই আচ্ছন্ন প্রাচ্যে। বাস্তব ও আধা-বাস্তবের মধ্যে তাঁর তুলির সাবলীল ঘোরাফেরা। দুই দেশের সম্পর্কের সেতুবন্ধনে রাজধানীতে তাঁরাই প্রথম শিল্পী হিসাবে স্বীকৃত থাকলেন মোট ১৯টি ক্যানভাসের মাধ্যমে। চতুর্থ শিল্পী হিসেবে আসার কথা ছিল মিনি করিমের। নানা কারণে তাঁর আসা হয়ে ওঠেনি। প্রদর্শিত হয়নি তাঁর কাজ।
এই নারী ত্রয়ীর পাশে একমাত্র পুরুষ ভারতীয় শিল্পী ও কিউরেটর কাজি এম রাঘিব। প্রদর্শনী চলবে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত।

প্রদর্শনী ‘দ্য হোপ’-এ চিত্রিত হয়েছে কঠিন লড়াই ও অবিরাম চড়াই-উতরাই পেরোনো নারীর জয়ের কাহিনি। ছবি: সংগৃহীত
প্রদর্শনী ‘দ্য হোপ’-এ চিত্রিত হয়েছে কঠিন লড়াই ও অবিরাম চড়াই-উতরাই পেরোনো নারীর জয়ের কাহিনি। ছবি: সংগৃহীত

প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতার যুদ্ধ পর্যন্ত শিল্পী মহল বাংলাদেশের জাতিসত্তার উন্মেষে যে অবদান রেখেছেন তার উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, শিল্পীরাই দেশ ও জাতির বিবেক। তাঁদের কাজের মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে বিবর্তনের রূপ। তিনি বলেন, এই প্রদর্শনীর নাম ‘দ্য হোপ’ রাখা হয়েছে এই আশায় যে প্রদর্শনীটি দুই দেশের শিল্পীদের আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে।