হঠাৎ শতকোটি রুপির মালিক!

মোহাম্মাদ রশিদ
মোহাম্মাদ রশিদ

মোহাম্মাদ রশিদ (৪৩)। করাচির একজন অটোরিকশাচালক। মেয়ে আবদার করেছে, সাইকেল কিনে দিতে হবে। তিনি স্থিরও করেছেন, মেয়ের আবদার ফেলবেন না। ৩০০ রুপির মধ্যে একটা পুরোনো সাইকেল কিনে দেবেন। এই ৩০০ রুপি তাঁর সারা বছরের জমানো অর্থ। অটোরিকশা চালিয়ে যা আয় করেন আর সংসারের যা ব্যয়, সঞ্চয়ের সুযোগ খুব কমই হয়। ব্যাংকে একটা হিসাব খুলেছিলেন বহু আগে, কিন্তু লেনদেন নেই।

সেই মোহাম্মাদ রশিদের পিলে চমকে গেল, যখন শুনলেন তাঁর সেই অব্যবহৃত ব্যাংক হিসাবে ৩০০ কোটি রুপি (২ কোটি ২৫ লাখ ডলার) জমা হয়েছে। দরিদ্রদশা থেকে একেবারে শতকোটি রুপির মালিক!—মোহাম্মাদ রশিদের বিশ্বাস হয় না। তিনি ভয়ে-আতঙ্কে ঘামতে থাকেন।

কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা থেকে ফোন পেয়ে রশিদ আরও ঘাবড়ে যান। ভাবেন, পালাতে হবে। কিন্তু বন্ধু-শুভানুধ্যায়ী আর পরিবারের লোকজন মিলে তাঁকে বোঝালেন, তদন্তে সহযোগিতা করাই হবে শ্রেয়। রশিদ সেটি করলেনও। আর বেঁচেও গেলেন এই যাত্রায় বড় বিপদ থেকে। জানলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারের নেওয়া কালোটাকা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর মতো এমন দিন আনেন দিন খান লোকজনের ব্যাংকে শত শত কোটি রুপি ঢুকছে। অনেকের ব্যাংক হিসাব নেই। অথচ তাঁদের নামে দিব্যি ব্যাংক হিসাব খুলে সেখানে শত শত কোটি রুপির লেনদেন চলছে। সবই মানি লন্ডারিংয়ের জাদুকরি কারবার!

এভাবেই পাকিস্তানের ধনী লোকজন দরিদ্র লোকজনের ব্যাংক হিসাবে অবৈধ অর্থ লেনদেন করে বিদেশে পাচার করছেন। এর সঙ্গে অনেক ক্ষমতাধর লোক জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছেন। তাঁরা খুঁজে পান, হাজার হাজার দরিদ্র লোকের নামে ভুয়া ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৪০ কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। প্রায় ৬০০ কোম্পানি ও ব্যক্তি এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।