পাকিস্তানে সুপ্রিম কোর্টে মুক্তি পেলেন আসিয়া বিবি

আসিয়া বিবি। ছবি: এএফপি
আসিয়া বিবি। ছবি: এএফপি

পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হয়ে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি পাওয়া খ্রিষ্টান নারী আসিয়া বিবিকে খালাস দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। ২০১৫ সালে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন তিনি। এর আগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে নিম্ন আদালতে আসিয়া বিবিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল। ২০০৯ সালে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয়।

আজ পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি মিয়া সাকিব নিসার, আসিফ সাইদ খোসা ও মাজহার আলম খান মিয়ানখেল আসিয়া বিবির বিরুদ্ধে ওঠা অবমাননার দায় থেকে রেহাই দেন।

রায় ঘোষণার সময় পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি মিয়া সাকিব নিসার বলেন, মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি ও দোষী সাব্যস্তকরণের বিরুদ্ধে আপিল গৃহীত হয়েছে।

দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় ইথান ওয়ালি গ্রামের আসিয়া বিবিকে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)–কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে একই পাত্রের পানি খাওয়া নিয়ে তর্কাতর্কির সময় তিনি ধর্ম অবমাননা করেছেন বলে দুই মুসলিম নারী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে বিচারিক আদালতে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়।

চার বছর পর লাহোরের হাইকোর্ট সেই রায়কেই বহাল রেখেছিলেন।

রায়ে অসন্তুষ্ট হয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী চৌধুরী গোলাম মুস্তাফা বলেন, তিনি ক্ষমা চেয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন।

আসিয়ার আইনজীবী সাইফুল মুলুক বলেন, ‘এ রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, দরিদ্র, সংখ্যালঘু মানুষ অনেক সমস্যা থাকলেও আদালতে বিচার পান। এটা আমার জীবনের অন্যতম সুখের দিন।’

রায় ঘোষণার পর শত শত মানুষ রাওয়ালপিন্ডি ও ইসলামাবাদে রাস্তা অবরোধ করেন। এ ছাড়া করাচি ও পেশোয়ারের মতো কয়েকটি শহরে মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছে। এর আগে ১৩ অক্টোবর উগ্র ডানপন্থী তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) আসিয়াকে মুক্তি দিলে দেশব্যাপী বিক্ষোভ করার হুমকি দেয়।

রাজধানী ইসলামাবাদে গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।