শরণার্থীদের আক্রমণকারী সেই সাংবাদিকের সাজা মওকুফ

রোজস্ক শহরের কাছে আসা শরণার্থীদের ভিডিও করছিলেন সাংবাদিক পেট্রা লাজলো। ছবি: রয়টার্স
রোজস্ক শহরের কাছে আসা শরণার্থীদের ভিডিও করছিলেন সাংবাদিক পেট্রা লাজলো। ছবি: রয়টার্স

হাঙ্গেরি ও সার্বিয়া সীমান্তে শরণার্থীদের আক্রমণকারী নারী টেলিভিশন সাংবাদিক পেট্রা লাজলোর শাস্তি মওকুফ করেছেন হাঙ্গেরির সর্বোচ্চ আদালত।

২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সার্বিয়া ও হাঙ্গেরি সীমান্তের রোজস্ক শহরের কাছে আসা শরণার্থীদের লাথি মেরে ফেলে দেওয়ার ঘটনার ছবি বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হয়। সেই ঘটনার ভিডিওতে টেলিভিশন সাংবাদিক পেট্রা লাজলো ক্যামেরা হাতে সীমান্তরক্ষীদের বাধা ডিঙিয়ে একাধিক শরণার্থীকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিতে দেখা যায়।

এ ঘটনার পরপরই হাঙ্গেরির বিরোধী দলের দুজন রাজনীতিক সাংবাদিক পেট্রা লাজলোর বিরুদ্ধে মামলা করেন। ভিডিও ফুটেজটি প্রকাশ হলে হাঙ্গেরির এন ওয়ান টিভি সমালোচনার মুখে ওই সাংবাদিককে ছাঁটাই করেন। উল্লেখ্য, হাঙ্গেরি এন ওয়ান টিভি ক্ষমতাসীন কট্টরবাদী জবিক পার্টির সমর্থক। ওই ঘটনার কারণে হাঙ্গেরির একটি আদালত সাংবাদিক পেট্রা লাজলোকে ২০১৬ সালে তিন বছর সত্যতা প্রমাণীকরণ দণ্ডে দণ্ডিত করেন।

সাংবাদিক পেট্রা লাজলোর লাথিতে শিশুসহ দুই শরণার্থী মাটিতে পড়ে যান। ছবি: রয়টার্স
সাংবাদিক পেট্রা লাজলোর লাথিতে শিশুসহ দুই শরণার্থী মাটিতে পড়ে যান। ছবি: রয়টার্স

অভিযোগের বিষয়ে সেই সময় আদালতে পেট্রা লাজলো বলেছিলেন, তিনি বর্ণবাদী বা হৃদয়হীন মানুষ নন। তবে ঘটনার সময় আতঙ্কগ্রস্ত মানুষের কাছ থেকে নিজের আত্মরক্ষার জন্য তিনি তা করেছিলেন। তবে অন্য সাংবাদিকদের করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তিনি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে শরণার্থীদের লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিচ্ছিলেন। ঘটনার পর আদালতে করা মামলায় দক্ষিণ হাঙ্গেরীয় শহর সেজগেডের আদালত পেট্রাকে তিন বছর সত্যতা-প্রমাণীকরণ সাজায় দণ্ডিত করেন।

এই রায়ের বিরুদ্ধে সাংবাদিক পেট্রা লাজলো আপিল করলে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের সর্বোচ্চ আদালত তাঁর সাজা মওকুফ করে দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে সার্বিয়া ও হাঙ্গেরির সীমান্ত দিয়ে শরণার্থী প্রবেশ করেন। ওই ঘটনার পরপরই হাঙ্গেরির সরকার সার্বিয়া ও হাঙ্গেরির সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করেন। তবে হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করা এসব শরণার্থীর বেশির ভাগ পরে জার্মানি ও অস্ট্রিয়াতে চলে যান।