১৪ টি তথ্য

১. জন্মের পর ম্যান্ডেলার নাম রাখা হয় রোলিহ্লাহ্লা। আঞ্চলিক ভাষায় নামটির অর্থ ‘গাছের ডাল টানা’। আর কথ্য ভাষায় এই নামের মানে দাঁঁড়ায় ‘সমস্যা সৃষ্টিকারী’। তাঁর বর্তমান নাম ‘নেলসন’ রেখেছিলেন মিশনারি বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক।

২. ছাত্রবিক্ষোভে যোগ দেওয়ার অভিযোগে ম্যান্ডেলাকে ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে তিনি পড়াশোনা শেষ করে আইনের ওপর ডিগ্রি নিয়েছেন উইটস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

৩. টেম্বু গোষ্ঠীর নেতা জোংগিনতাবা দালিন্দেবো তরুণ ম্যান্ডেলার বিয়ের আয়োজনের চেষ্টা করেছিলেন। এতে ম্যান্ডেলা ইস্টার্ন কেপ ছেড়ে পালিয়ে জোহানেসবার্গে চলে যান। সেখানে তিনি একটি খনিতে নৈশপ্রহরীর চাকরি নেন।

৪. ম্যান্ডেলা একসময় আলেক্সান্দ্রা শহরতলিতে থাকতেন। তবে পরে সোয়েটোর অর্লান্ডোতে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ওয়াল্টার সিসুলু ও তাঁর মায়ের সঙ্গে বাসায় ওঠেন।

প্রথম স্ত্রী ইভলিন মেজের সঙ্গে, বিয়ের দিন
প্রথম স্ত্রী ইভলিন মেজের সঙ্গে, বিয়ের দিন

৫. ম্যান্ডেলার প্রথম স্ত্রী ইভলিন মেজ ছিলেন একজন নার্স ও সিসুলুর আত্মীয়। এই দম্পতির চারটি সন্তান হয়েছিল। ১৯৫৮ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।

৬. আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এএনসি) সশস্ত্র শাখার প্রধান ছিলেন ম্যান্ডেলা। এ ছাড়া তিনি বন্ধু অলিভার ট্যাম্বোর সঙ্গে মিলে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মালিকানাধীন আইনি সহায়তা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। 

৭. সশস্ত্র সংগ্রামে সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে ম্যান্ডেলা ১৯৬২ সালে দেশ ছাড়েন। মরক্কো ও ইথিওপিয়ায় গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন তিনি।

৮. ম্যান্ডেলাকে শত শত পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কানাডার সম্মানজনক নাগরিকত্ব, ব্রিটিশ লেবার পার্টি ও সে দেশের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাবের সম্মানজনক সদস্য। এ ছাড়া একটি পারমাণবিক কণার নাম রাখা হয়েছে ম্যান্ডেলা পার্টিকল। একটি প্রাগৈতিহাসিক কাঠঠোকরা ও একটি অর্কিডের নামকরণও হয়েছে ম্যান্ডেলার নামে।

৯. বর্ণবাদী সরকার ম্যান্ডেলাকে ছয়বার মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তিনি রাজি হননি। একবার তিনি বিবৃতি দেন, ‘জনগণের সংগঠন (এএনসি) যদি নিষিদ্ধ থাকে, তাহলে আমাকে কোন ধরনের মুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে?’

আত্মজীবনীর প্রচ্ছদ
আত্মজীবনীর প্রচ্ছদ

১০. ম্যান্ডেলা ১৯৭০-এর দশকে একটি স্মৃতিকথা লেখেন। সেটির পাণ্ডুলিপি পলিথিনে মুড়িয়ে কারাগারের বাগানে পুঁতে রাখা হয়। কর্তৃপক্ষ বাগানে একটি দেয়াল তুলতে গেলে ব্যাপারটি ধরা পড়ে যায়। শাস্তি হিসেবে ম্যান্ডেলার পড়াশোনার সব সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

১১. দ্বিতীয় স্ত্রী উইনি মাদিকিজেলা-ম্যান্ডেলার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি আমিনা কাশালিয়া নামের এক বান্ধবীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হন। ৮০তম জন্মদিনে ম্যান্ডেলা বিয়ে করেন গ্রাসা ম্যাশেলকে।

১২. বর্ণবাদী সরকার এএনসিকে একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যও এএনসিকে সন্ত্রাসীর তকমা দেয়। মাত্র ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ম্যান্ডেলা ও তাঁর সংগঠনকে সন্ত্রাসীর তালিকা থেকে বাদ দেয়।

ম্যান্ডেলাকে রোবেন দ্বীপের কারাগারে ১৮ বছর রাখা হয়
ম্যান্ডেলাকে রোবেন দ্বীপের কারাগারে ১৮ বছর রাখা হয়

১৩. ম্যান্ডেলার জন্মদিন ১৮ জুলাইকে নেলসন ম্যান্ডেলা ইন্টারন্যাশনাল ডে হিসেবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ। বিশ্ব সংস্থা এই প্রথমবারের মতো কোনো ব্যক্তির জন্য একটি দিন উৎসর্গ করে।

১৪. কারাগারে ম্যান্ডেলাকে মাত্র দুই মিটার চওড়া ও আড়াই মিটার লম্বা একটি প্রকোষ্ঠে রাখা হয়। শোয়ার ব্যবস্থা ছিল মেঝেতে। আর শুধু ছিল মলমূত্র ত্যাগের জন্য একটি বালতি। প্রথম দিকে প্রতি ছয় মাসে একজনমাত্র দর্শনার্থীর সঙ্গে সাক্ষাৎ ও একটি চিঠি লিখতে পারতেন ম্যান্ডেলা।

সূত্র: মেইল অ্যান্ড গার্ডিয়ান