মিজোরাম ভোটেও এনআরসির প্রতিশ্রুতি

ভোটে জিততে এনআরসি-ই (নাগরিক পঞ্জি) হচ্ছে ভারতের মিজোরামের বিরোধীদের প্রধান হাতিয়ার। রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ) জানিয়েছে তাঁরা ভোটে জিতলেই আসামের মতো তাঁদের রাজ্যেও চালু করবেন এনআরসি।

আগামী ২৮ নভেম্বর ৪০ সদস্যের মিজোরাম বিধানসভার ভোট। পূর্ব ও উত্তরপূর্ব ভারতের ১২টি রাজ্যের মধ্যে একমাত্র এখানেই রয়েছে কংগ্রেস ক্ষমতায়। গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস একাই পেয়েছিল ৪০টির মধ্যে ৩৪টি আসন। তবে বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের অন্তত ছয়জন বিধায়ক যোগ দিয়েছেন বিরোধী শিবিরে।

মিজোরামের প্রধান বিরোধীদল এবারের নির্বাচনে হাতিয়ার করেছে এনআরসিকে। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা জোরাম থাঙ্গা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ভোটে জিতলেই চালু হবে এনআরসি। বিজেপিও এবার কোমর বেঁধে নেমেছে মিজোরামে। ত্রিপুরার মতো মিজোরামেও তাঁদের স্লোগান ‘চলো পাল্টাই’। বিজেপির অস্ত্র কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আর রাজ্যে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি।

বিজেপি নেতা সুন্দর পাল মিজোরামের রাজধানী আইজল থেকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কংগ্রেসের অপশাসনে ব্যাপক দুর্নীতিই পেয়েছে রাজ্য। উন্নয়নের লেশমাত্র নেই। তাই এবার উন্নয়নের স্বার্থে আমাদের স্লোগান “চলো পাল্টাই”।’

কংগ্রেস অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগকে গুরুত্ব না দিয়ে আরও উন্নয়নকেই হাতিয়ার করতে চায়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা মুখ্যমন্ত্রী লাল থানহাওলার প্রতিশ্রুতি ভোটে জিতলে ছাত্রদের বিনা পয়সায় ল্যাপটপ দেবেন। মাদকাসক্ত যুবকদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে রয়েছে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রাম গড়ে তোলার স্বপ্নও।

মিজোরামে ভোটের প্রচার এখন তুঙ্গে। প্রচারে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর মতো ওজনদার নেতারাও। তবে ভোটের আগে অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বিরোধ উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। মিজোরামের এনজিওগুলো বলছে-মিজোরামের বাসিন্দাদের রাজ্যে এসেই ভোট দিতে হবে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ত্রিপুরায় আশ্রিত রাজ্যের উপজাতি জনগোষ্ঠী ব্রু বা রিয়াংরা মিজোরামে গিয়ে ভোট দিতে নারাজ। তাঁদের দাবি ত্রিপুরার যে ছয়টি শিবিরে তাঁরা আশ্রিত, সেখানেই ভোট নিতে হবে। এই নিয়ে এখন মিজোরামে উত্তেজনা তুঙ্গে। দাবি আর পাল্টা দাবিতে মুখর এনজিওগুলো। দাবি উঠেছে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিককে বদলি করতে হবে।

ব্রু আশ্রিতদের নেতা ব্রুনো মুসা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের মিজোরাম থেকে মারধর করে ২০ বছর আগে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই থেকে ত্রিপুরাতেই আশ্রিত। তাই এখানেই ভোট দিতে চাই।’