প্যারিসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শত বছর স্মরণ

এমানুয়েল মাখোঁ
এমানুয়েল মাখোঁ

পুরোনো জাতীয়তাবাদী শক্তি আবারও বিশ্বে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা ডেকে আনছে বলে বিশ্বনেতাদের সতর্ক করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। আজ রোববার ফ্রান্সের প্যারিস শহরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শত বছর স্মরণ অনুষ্ঠানে তিনি এই সতর্ক করেন।

অনুষ্ঠানে প্রায় ৭০টি দেশের প্রধানদের উপস্থিতিতে বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্যারিসে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডো প্রমুখ।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষের জীবন দেওয়ার পরও পুরোনো জাতীয়তাবাদের ভূত আবারও বিশ্বজুড়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, যা বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। দেশপ্রেম আর জাতীয়তাবাদ এক বিষয় নয়।

স্মরণসভার এক দিন আগেই ফের ইউরোপীয় ঐক্য, সংহতি ও শান্তির পাশাপাশি ইউরোপীয় সেনাবাহিনী গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। জার্মানি বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে দীর্ঘ সময় নিলেও তারাও এখন ইউরোপীয় সেনাবাহিনী গড়ে তোলার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে। তবে প্যারিসে পৌঁছার আগ মুহূর্তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় সেনাবাহিনী গড়ে তোলার বিরোধিতা করে ন্যাটো জোটের পেছনে আরও আর্থিক বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন।

মধ্য ইউরোপে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রধান দুই ভুক্তভোগী দেশ জার্মানি ও ফ্রান্স দীর্ঘদিন থেকেই ইউরোপীয় শান্তি ও ঐক্যের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর জার্মানি ও ফ্রান্সের সুসম্পর্ক দীর্ঘদিনের। আগামী সপ্তাহে এমানুয়েল মাখোঁ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শত বছর স্মরণে জার্মানির পার্লামেন্টে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন।

এদিকে প্যারিসের অনুষ্ঠানে কঠোর নিরাপত্তা সত্ত্বেও দুই নারী শরীরে যুদ্ধবিরোধী স্লোগান লিখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাড়িবহরের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন। পরে ওই দুই নারীকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ।

প্রসঙ্গত, ১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই অস্ট্রিয়া ও হাঙ্গেরির সেনাবাহিনী, সার্বিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার মাধ্যমে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোল বাজতে শুরু করে। অস্ট্রিয়া আর হাঙ্গেরির বড় প্রতিবেশী জার্মানিও এই যুদ্ধের পক্ষ নেয়। অপর দিকে রাশিয়া, ফ্রান্স ও ব্রিটেন সার্বিয়ার পক্ষ নিয়েছিল। পর্যায়ক্রমে ইউরোপ মহাদেশ হয়ে মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, পূর্ব এশিয়ার নানা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এই যুদ্ধ। চার বছর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর এর অবসান হয় ১৯১৮ সালের ১১ নভেম্বর।