বিজেপির রথযাত্রা নিয়ে উত্তপ্ত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি

লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিজেপি ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ নামের সুসজ্জিত রথ বের করার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী ৫ ও ৭ ডিসেম্বর এই রথ বের করা হবে। এই রথযাত্রা নিয়ে উত্তপ্ত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। পাল্টাপাল্টি কথার তির ছুড়ছে একেকটি দল।

আগামী ৫ ডিসেম্বর তারাপীঠ থেকে একটি ও ৭ ডিসেম্বর উত্তরের কোচবিহার ও দক্ষিণের সাগরদ্বীপ থেকে দুটি রথ বের হবে। এগুলো কলকাতায় এসে পৌঁছাবে আগামী ২২ জানুয়ারি। ২৩ জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে মহাসমাবেশ করবে বিজেপি। এই সমাবেশেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যোগ দেওয়ার কথা।

বিজেপির এই রথযাত্রা ঘোষণার পর সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র পাল্টা ঘোষণা দিয়ে বলেন, এই রাজ্যের মানুষ রাস্তায় নেমে বিজেপির রথযাত্রা আটকে দেবে। প্রয়োজনে রাস্তায় মানুষের দেয়াল তুলে দিতে হবে, যাতে বিজেপির রাস্তা স্তব্ধ হয়ে যায়, রথযাত্রা যেন কোনো পথ খুঁজে না পায়।’ পাশাপাশি একই সঙ্গে এই রথযাত্রার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তৃণমূল কংগ্রেসও।

গত শনিবার মালদহে এক জনসভায় বিজেপির মহিলা মোর্চার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি লকেট চট্টোপাধ্যায় হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘বাংলায় রথযাত্রা আটকানোর চেষ্টা যাঁরা করবেন, তাঁদের রথের চাকাতেই পিষে মারা হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘বিরোধীদের রথযাত্রা আটকানোর সাহস নেই। কারণ, মানুষ এই রাজ্যে রথযাত্রা চাইছে।’ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এ রাজ্যের নারীরা এখন বিজেপির নেতৃত্বে সংগঠিত হচ্ছে। এবার কেউ মারলে পাল্টা মার দেওয়া হবে। বন্দুকের বিরুদ্ধে বন্দুক নিয়েই লড়াই হবে।’

এই হুমকির পরই মালদহের কংগ্রেস সভাপতি সাংসদ মৌসুম বেনজির নূর বলেছেন, ‘বিজেপির এটা কোন সংস্কৃতি? আমরা বিজেপির এই সংস্কৃতি নিয়ে শঙ্কিত।’

জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি বাবলা সরকার বলেছেন, রাজনীতির নামে বিজেপির এই গুন্ডামি বরদাশত করা যায় না।

বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্যের বিষয়ে তৃণমূল নেতা নগর ও পৌর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘আমরা মারপিট করিনি। আমরা প্রেমে বিশ্বাস করি। আমি যত দূর জানি, মানুষ সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য লকেট পরে।’

ফিরহাদ হাকিমের এই মন্তব্যের পর ফের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। লকেট নিজেই এর পরিপ্রেক্ষিতে একহাত নেন তৃণমূলকে। বলেন, ‘মন্ত্রীর ওই মন্তব্য আপত্তিকর এবং অপমানজনক। এই মন্তব্য করে ফিরহাদ হাকিম শুধু আমাকে নয়, সমস্ত নারী অপমান করেছেন। এটা তো তৃণমূলের সংস্কৃতি। তৃণমূল নারীদের সম্মান দিতে জানে না। নারীদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয়, সেই শিক্ষাও নেই তৃণমূলের। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও একজন নারী। তাঁরই দলের এজন বিধায়ক কীভাবে এই মন্তব্য করতে পারেন? মুখ্যমন্ত্রীর উচিত ফিরহাদ হাকিমের এই মন্তব্যের প্রতিবাদ করা।’