ন্যাশনাল হেরাল্ডের 'উৎখাত' এখনই নয়

জওহরলাল নেহরুর তৈরি ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকাকে এখনই দিল্লির ‘হেরাল্ড হাউস’ থেকে উৎখাত করা হচ্ছে না। দিল্লি হাইকোর্ট আজ বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, ২২ নভেম্বর পর্যন্ত এ বিষয়ে যেন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয়। ওই দিন এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা সরকারের পক্ষে আদালতকে জানান, ২২ নভেম্বর পর্যন্ত সরকার এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেবে না। স্থগিতাদেশ বহাল রাখবে।

গত অক্টোবর মাসের ৩০ তারিখে কেন্দ্রীয় সরকার হেরাল্ড হাউসের লিজ বাতিল করে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে বাড়ি খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেডকে (এজিএল)। ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকার মালিকানা এই সংস্থারই। ৫৬ বছরের লিজ খারিজ করার কারণ হিসেবে সরকার জানিয়েছিল, খবরের কাগজ প্রতিষ্ঠার জন্যই ওই জমি এজিএলকে লিজ দেওয়া হয়েছিল। কাগজের প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। ওখানে কোনো ছাপাখানাও নেই। তবুও এজিএল বাণিজ্যিকভাবে ওই সম্পত্তি ব্যবহার করে চলেছে। সরকারি বিভাগকে (পাসপোর্ট অফিস) ভাড়াও দিয়েছে। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে এজিএল হাইকোর্টে যায়। সংস্থার পক্ষে কংগ্রেস নেতা ও আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি হাইকোর্টে ওই নির্দেশ খারিজ করার আবেদন জানিয়ে বলেন, নির্দেশটি একপেশে, বিদ্বেষপূর্ণ এবং রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিমূলক।

ন্যাশনাল হেরাল্ডের বিরুদ্ধে মূল মামলাটি করা বিজেপি নেতা সুব্রক্ষ্মণ্যম স্বামীর। তাঁর অভিযোগ, এই পত্রিকার যাবতীয় সম্পত্তি কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও তাঁর পুত্র রাহুল অন্যায়ভাবে হাতিয়ে নিয়েছেন।

কংগ্রেস দলের কাছে এজিএলের সুদবিহীন ঋণের মোট পরিমাণ ৯০ কোটি ২৫ লাখ রুপি। সংস্থা থেকে প্রকাশিত হতো তিনটি পত্রিকা। ইংরেজিতে ন্যাশনাল হেরাল্ড, উর্দু ভাষায় কৌমি আওয়াজ এবং হিন্দিতে নবজীবন। ২০০৮ সালে তিনটি পত্রিকাই বন্ধ হয়ে যায়। স্বামীর অভিযোগ, ২০১১ সালে সোনিয়া ও রাহুল ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান’ নামে একটি সংস্থা খোলেন, যার ৭৬ শতাংশ শেয়ারের মালিক তাঁরা। বাকি ২৪ শতাংশ অন্য কংগ্রেস নেতাদের। ওই সংস্থার হাতে ঋণ সহ যাবতীয় দায় এজিএল মাত্র ৫০ লাখ রুপির বিনিময়ে তুলে দেয়।

স্বামীর অভিযোগ, এভাবে সোনিয়া ও রাহুল গান্ধী সারা দেশে এজিএলের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। কংগ্রেসের এই দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগও আনা হয়েছে। দুই নেতাই আপাতত জামিনে মুক্ত। বিজেপি এ মামলাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিজেপি নেতারা বিভিন্ন নির্বাচনী প্রচারে বলছেন, যাঁরা জামিনে মুক্ত, সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা তাঁদের পক্ষে শোভা পায় না।