তাইওয়ানের 'বর্ণিল গ্রাম'

তাইওয়ানের মধ্যাঞ্চল তাইচুংয়ের একটি গ্রাম এখন ‘বর্ণিল গ্রাম’ হিসেবে পর্যটকদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে। সেখানে শুধু রং আর রঙের ছড়াছড়ি। হুয়াং ইয়াং-ফু (৯৬) নামের এক প্রবীণ আগত পর্যটকদের স্বাগত জানান। মূলত গ্রামটি তাঁর কারণেই বিশ্বের কাছে পরিচিতি লাভ করেছে। ভালোবেসে তাঁকে সবাই ডাকেন ‘বর্ণিল দাদু’ নামে।

বছর আটেক আগে এই গ্রামের বাসিন্দাদের সরকার জানিয়ে দেয়, তারা গ্রামটিকে আধুনিকায়ন করবে। এ জন্য নতুন স্থাপনা তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে তারা। বাসিন্দাদের এ জন্য নগদ অর্থ পরিশোধ করা হবে, নয়তো অন্য কোথাও স্থানান্তরিত হওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু হুয়াংয়ের মন মানে না। তিনি এই গ্রাম ছেড়ে কোথাও যাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন। কারণ, এই গ্রামে তাঁর ৩৭ বছর ধরে বসবাস। একসময় ১ হাজার ২০০ পরিবারের বাস ছিল এখানে। তা কমতে কমতে ১১-তে গিয়ে ঠেকে। হুয়াং শুধু এখানে থাকেন। বাকিরা সবাই শহরে থাকেন।

হুয়াং তাঁর গ্রাম বাঁচাতে অভিনব উদ্যোগ নেন। আবাসন ব্যবসায়ীদের বুলডোজার থেকে গ্রামটিকে বাঁচাতে বাড়িঘরকে শিল্পকর্মে পরিণত করার পরিকল্পনা করেন। বাড়ির দেয়ালগুলোকে বর্ণিল রঙে সাজিয়ে তোলেন, একাই। এটি এখন তাইওয়ানের অন্যতম শীর্ষ পর্যটন এলাকা। প্রতিবছর ১০ লাখ পর্যটক আসেন এখানে। সরকার হুয়াংকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, গ্রামটি বাঁচিয়ে রাখবে তারা। পর্যটন এর একটা কারণ। আর ওই চিত্রশিল্পী বৃদ্ধ, এটাও একটা কারণ।

বাবার হাত ধরে হুয়াংয়ের আঁকার হাতেখড়ি হয়েছিল তাঁর মাত্র তিন বছর বয়সে। তারপর আর কখনো আঁকেননি। আট বছর আগে এক রাতে হুয়াং প্রথম একটি পাখি আঁকেন নিজের ঘরের দেয়ালে। ধীরে ধীরে প্রতিবেশীদের দেয়ালে। যখন যা মনে এসেছে, এঁকেছেন আপন মনে। এ জন্য কোনো প্রস্তুতিও থাকে না আঁকার সময়। কুকুর, বিড়াল, উড়োজাহাজ, এমনকি প্রিয় তারকা কুংফু কিংবদন্তি ব্রুসলির ছবিও এঁকেছেন দেয়ালজুড়ে।