মমতার ধমকে মেয়রপদ ছাড়লেন শোভন চট্টোপাধ্যায়

কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত
কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত কাছের মানুষ ও আস্থাভাজন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। রাজ্য মন্ত্রিসভার দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় তাঁর অধীনে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্বেও তিনি। কিন্তু পারিবারিক অশান্তি কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না তাঁর। শেষ পর্যন্ত মমতার ধমকে পদত্যাগ করেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন মমতা।

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের। এসবের মধ্যে শোভন চট্টোপাধ্যায় জড়িয়ে পড়েছেন এক অধ্যাপিকার সঙ্গে বন্ধুত্বে। এটাই মেনে নিতে পারেননি শোভনের স্ত্রী। বিষয়টি চলে গেছে মমতার কান পর্যন্ত। তিনি শোভনকে ডেকে উপদেশ দেন। গত আগস্ট মাসে এ নিয়ে প্রথম শোভনকে ভর্ৎসনা করেন। তখন ক্ষোভে মেয়র এবং মন্ত্রিত্ব পদে ইস্তফা দেওয়ার চিঠি দেন শোভন মমতাকে। কিন্তু ওই সময় মমতা শোভনকে ডেকে ফিরিয়ে দেন সেই চিঠি।

গতকাল মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিতে এসে মমতা স্পিকারের ঘরে ডেকে নেন শোভনকে। সেখানে ফের মমতা তাঁকে ভর্ৎসনা করেন। বিকেলে শোভন চট্টোপাধ্যায় মন্ত্রিত্ব এবং মেয়র পদে ইস্তফা দেওয়া চিঠি পৌছে দেন রাজ্য সরকারের মুখ্য সচিব গৌতম সান্যালের হাতে। তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

২০১০ সাল থেকে কলকাতা পৌর করপোরেশনের মেয়র পদে ছিলেন গৌতম। গতকাল মমতার ভর্ৎসনার পর পদত্যাগপত্রে শোভন চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘মন্ত্রিত্ব এবং মেয়র পদ ছাড়তে আমি বাধ্য হলাম।’

পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, ‘অনেক বুঝিয়েছি, বোঝেনি শোভন। তাই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছি। এর আগেও শোভন ইস্তফাপত্র দিয়েছিল।’

মমতা বলেছেন, শোভনের ছেড়ে আসা দুটি দপ্তরের দায়িত্ব সামলাবেন পৌর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আর মেয়রের দায়িত্ব সামলাবেন পৌর কমিশনার খলিল আহমেদ।

শোভনের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘এক মহিলার পাল্লায় পড়ে সব শেষ। আমি আজও তাকে ভালবাসি।’

মেয়র শোভনের পদত্যাগপত্র দেওয়ার খবরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘শোভনের জন্য তাঁদের দরজা খোলা রয়েছে। কেউ দলে আসতে চাইলে আসতে পারেন।’