পুষ্টিহীনতায় মৃত্যু হবে ৮৫ হাজার শিশুর

ইয়েমেনে চরম পুষ্টিহীনতায় ভুগে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ৮৫ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে। ছবি: বিবিসি
ইয়েমেনে চরম পুষ্টিহীনতায় ভুগে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ৮৫ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে। ছবি: বিবিসি

যুদ্ধের কারণে ইয়েমেনে সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তিন বছর ধরে চলছে যুদ্ধ। চরম মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে দেশটিতে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে চলমান যুদ্ধে চরম পুষ্টিহীনতায় ভুগে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ৮৫ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বুধবার এসব কথা জানানো হয়েছে।

সেভ দ্য চিলড্রেনের হিসাবে, ইয়েমেনে অপুষ্টিতে ভুগে যত শিশুর মৃত্যু হবে, তা যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম শহরের পাঁচ বছরের কম বয়সী মোট শিশুর পরিমাণের সমান।

জাতিসংঘের হিসাবে, ইয়েমেনে গত তিন বছরের যুদ্ধে ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে। অর্ধেকের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষপীড়িত হওয়ায় দেশটিতে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি করেছে বলে সতর্ক করে জাতিসংঘ। ইয়েমেন যুদ্ধ বন্ধ করে মানবিক বিপর্যয়ের হাত থেকে দেশটিকে রক্ষা করতে সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

সেপ্টেম্বরের শুরুতে সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, ২০১৮ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী কমপক্ষে চার লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। তারা সতর্ক করে বলে, বছর শেষ হওয়ার আগেই আরও ৩৬ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে।

২০১৫ সালের মার্চে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের হস্তক্ষেপে ইয়েমেনে সংঘাত বাড়তে থাকে। সে বছর সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইরান–সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে। এরপর থেকে সংকট শুরু ইয়েমেনে

ইয়েমেনে অপুষ্টিতে ভুগে যত শিশুর মৃত্যু হবে, তা যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম শহরের পাঁচ বছরের কম বয়সী মোট শিশুর পরিমাণের সমান। ছবি: সেভ দ্য চিলড্রেন।
ইয়েমেনে অপুষ্টিতে ভুগে যত শিশুর মৃত্যু হবে, তা যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম শহরের পাঁচ বছরের কম বয়সী মোট শিশুর পরিমাণের সমান। ছবি: সেভ দ্য চিলড্রেন।

জাতিসংঘের হিসাবমতে, তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে কমপক্ষে ৬ হাজার ৮০০ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন ১০ হাজার ৭০০। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ। যুদ্ধের কারণে দেশটিতে সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি হয়েছে খাদ্যে। দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। বিশেষ করে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুরা ভয়াবহ এ যুদ্ধের সবেচেয়ে বড় শিকার।

কয়েক বছর আগে ইয়েমেনের মোট খাদ্য আমদানির প্রায় ৯০ শতাংশ দেশটির হুদাইদা বন্দর দিয়ে আসত। কিন্তু বর্তমানে বন্দরটি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। এ জন্য বাণিজ্য আমদানির পরিমাণ মাসে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কমেছে। এ ছাড়া বন্দরটির আশপাশে লড়াই চলতে থাকায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইয়েমেনের যুদ্ধে আড়াই হাজারের বেশি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলো এখন সশস্ত্র বাহিনীর ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।