বালিতে বাঁশের 'জাদুর বাড়ি'

আজকাল ভবন বা স্থাপনা নির্মাণে রড-সিমেন্টের ব্যবহার ছাড়া বিকল্প চিন্তাই করতে পারে না লোকে। ইন্দোনেশিয়ার ইলোরা হার্ডি এই পথে ব্যতিক্রম। পরিবেশবান্ধব টেকসই বাড়ির নকশা করাই এই স্থপতির একমাত্র লক্ষ্য ও আদর্শ। এ জন্য নিউইয়র্কের ডাকসাইটে ফ্যাশন প্রতিষ্ঠানের ডিজাইনারের চাকরি ছেড়ে দিতে একমুহূর্ত ভাবেননি। গড়ে তুলেছেন ‘ইবুকু’ নামের পরিবেশবান্ধব স্থাপনা নকশার প্রতিষ্ঠান।

ইলোরা বলেন, ইন্দোনেশিয়ার ভাষায় ‘ইবু’ শব্দের অর্থ ‘মা’, আর ‘কু’ শব্দের অর্থ ‘আমার’। ইবুকু অর্থ আমাদের এই ধরিত্রী মা। ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে ইলোরা গড়ে তুলেছেন তাঁর স্বপ্নের অনেক স্থাপনা। এ কাজে বালির বাসিন্দাদেরও সম্পৃক্ত করেছেন তিনি। এসব স্থাপনার মধ্যে সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর নকশার বাড়িটির নাম ‘শর্মা স্প্রিংস’। ছয়তলার এই স্থাপনা তৈরিতে পাঁচ বছর লেগেছে। আর এর উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে আট প্রকারের বাঁশ। একে এখন ‘জাদুর বাড়ি’ নামে অভিহিত করছেন পর্যটকেরা।

৭০০ বর্গফুটের শর্মা স্প্রিংসে রয়েছে চারটি আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন বেডরুম, বড় একটি খোলা লিভিং রুম, কিচেন ও ডাইনিং—কী নেই এতে! ভূমিকম্পেও বাঁশের নমনীয়তার কারণে এটির কিছু হবে না। নির্মাণ উপকরণ হিসেবে বাঁশ বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে ইলোরা বলেন, কংক্রিটের মতোই চাপ নিতে পারে প্রকৃতির উপকরণ বাঁশ। রডের মতোই ওজন বহনেও সক্ষম এটি। ঘুণে ধরা ও আর্দ্রতা বাঁশের প্রধান শত্রু হলেও সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করার পর এর মেয়াদ আজীবন করা সম্ভব। বাঁশ বাতাসের কার্বন ডাই–অক্সাইড কমাতেও সাহায্য করে থাকে।

ইবুকুর একজন জ্যেষ্ঠ স্থপতি দেভিত বিজয়া বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ায় প্রাচীনকাল থেকেই বাড়ি নির্মাণে বাঁশ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আমরা এখন এটিকে “নেক্সট” লেভেলে নিয়ে যেতে চাচ্ছি। এমন একদিন আসবে, যখন বাঁশই হবে স্থাপনার মূল উপাদান, আসবাবেরও মূল উপকরণ।’