'রাশিয়া পাগলের মতো আচরণ করেছে'

ইউক্রেনের জাহাজগুলোকে আটকাতে ক্রিমিয়ার কাছের কেরচ প্রণালির সেতুর নিচে ট্যাংকার ফেলে রাখে রাশিয়া। ছবি: রয়টার্স
ইউক্রেনের জাহাজগুলোকে আটকাতে ক্রিমিয়ার কাছের কেরচ প্রণালির সেতুর নিচে ট্যাংকার ফেলে রাখে রাশিয়া। ছবি: রয়টার্স

রাশিয়া–অধিকৃত ক্রিমিয়ার কেরচ প্রণালিতে ইউক্রেনের তিনটি জাহাজ ও ২৩ জন নাবিক আটকের জেরে ইউক্রেনে সামরিক আইন জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো। গতকাল সোমবার এ–সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের পর পার্লামেন্টে অনুমোদনের জন্য পাঠান তিনি। পরে পার্লামেন্ট এতে সমর্থন জানায়। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

২৮ নভেম্বর থেকে এই সামরিক আইন কার্যকর হবে। সেই থেকে আগামী ৩০ দিন তা বহাল থাকবে। এর ফলে ২০১৪ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের পর আবার সামরিক আইন জারির ঘটনা ঘটল। এই আইন জারির ফলে যেকোনো ধরনের সমাবেশ ও গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে কর্তৃপক্ষ।

নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের পর পোরোশেঙ্কো বলেন, ‘রাশিয়া বিনা উসকানিতে পাগলের মতো আচরণ করেছে।’ তবে সামরিক আইন জারির অর্থ যুদ্ধ ঘোষণা নয় জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন করে যুদ্ধে জড়ানোর পরিকল্পনা ইউক্রেনের নেই।

গত রোববার ক্রিমিয়া উপকূলে ইউক্রেন নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ আটক করেছে রাশিয়া। আটকের আগে জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়ে রাশিয়ার নৌবাহিনী। এতে ইউক্রেনের বেশ কয়েকজন নাবিক আহত হন। ইউক্রেনের জাহাজ আটকাতে ক্রিমিয়ার কাছের কেরচ প্রণালির সেতুর নিচে ট্যাংকার ফেলে রেখেছিল রাশিয়া। ফলে কৃষ্ণ সাগর থেকে আজোভ সাগরে জাহাজ চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যায়। জাহাজ আটকের পর গতকাল সোমবার সকালে সেতুর নিচ থেকে ট্যাংকার সরিয়ে নেয় দেশটি।

কয়েক মাস ধরেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছিল। চলতি বছরের প্রথম দিকে ক্রিমিয়ার কাছ থেকে ইউক্রেন রাশিয়ার দুটি জাহাজ আটক করলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা মারাত্মক আকার ধারণ করে। মস্কো এ ঘটনাকে ‘সমুদ্র-সন্ত্রাস’ বলে আখ্যায়িত করে এবং আজভ সাগরে রুশ সেনা টহল বাড়িয়ে দেওয়া হয়। রাশিয়ার এ পদক্ষেপকে অবৈধ বলে মন্তব্য করে ইউক্রেন। কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাফাই গেয়ে বলেছেন, ‘আমরা আগে শুরু করিনি।’

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর ইউক্রেন স্বাধীনতা লাভ করে। পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ট ইউক্রেনকে বরাবরই হুমকি বলে মনে করেন রাশিয়া। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন হামলা চালিয়ে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ অধিগ্রহণ করে রাশিয়া। এর জেরে রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সঙ্গে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর লড়াই শুরু হয়। ওই যুদ্ধে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়।