এবার আলোকচিত্রীকে তুলে নিল চীনা পুলিশ

চীনের পুরস্কারজয়ী আলোকচিত্রী লু গুয়াং। ছবি: রয়টার্স
চীনের পুরস্কারজয়ী আলোকচিত্রী লু গুয়াং। ছবি: রয়টার্স

চীনের পুরস্কারজয়ী আলোকচিত্রী লু গুয়াংয়ের খোঁজ নেই। অজ্ঞাত কারণে সপ্তাহ তিনেক আগে চীনের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে তুলে নিয়ে যান। লু গুয়াংয়ের স্ত্রী জু শিয়াওলি স্বামীকে ফেরত চেয়েছেন।

এর আগে হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যান ‘এক্স-ম্যান’ ও ‘আয়রন ম্যান’খ্যাত অভিনেত্রী ফান বিংবিং ও ইন্টারপোলের প্রধান মেং হোংউআই। এই দুজন চীনা নাগরিকের পরে খোঁজ মেলে। পুলিশ জানায়, এঁরা তাদের হেফাজতে আছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের থাকেন লু গুয়াং। অক্টোবরে চীনে একটি সেমিনারে বক্তব্য দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ পান। এরপরই তিনি চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে গিয়েছিলেন।

আলোকচিত্র বিষয়ে কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত ২৩ অক্টোবর চীনের লু জিনজিয়াং প্রদেশের রাজধানী উরুমকিতে যান। সেখান থেকে চেন নামে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে তার সিচুয়ান প্রদেশে যাওয়ার কথা ছিল। সিচুয়ানে একটি দাতব্য অনুষ্ঠানেও যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল লুর। কিন্তু চেন সিচুয়ানে গিয়ে লুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন এবং নিউইয়র্কে জু শিলাওলির সঙ্গে যোগাযোগ করে লু সম্পর্কে জানতে চান।

জু শিয়াওলি বলেন, ৩ নভেম্বর জিনজিয়াংয়ে গিয়েছিলেন লু গুয়াং। এরপর তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি। ৫ নভেম্বর এক বন্ধুর সঙ্গে লুর দেখা করার কথা ছিল। চীন সরকার ক্ষুব্ধ হতে পারে, এমন কোনো কাজ তাঁর স্বামী করেছেন কি না, সে বিষয়ে কিছু জানেন না বলেও জানান জু।

জু জানান, তিনি নিজেও লু কোথায় আছেন, জানেন না। সর্বশেষ ৩ নভেম্বর তিনি স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছেন।

যে ব্যক্তি লুকে চীনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন জু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তিনি জানতে পারেন, লুকে জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে গেছেন। পরে জিনজিয়াং প্রদেশে লুর শহরের এক কর্মকর্তা তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ‍জুকে নিশ্চিত করেন। এ নিয়ে আর কোনো তথ্য তিনি দেননি বলেও জানান লুর স্ত্রী জু।

টুইটারে এক পোস্টে জু লেখেন, ‘লু ২০ দিনের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ। তাঁর পরিবারের সবচেয়ে কাছের সদস্য হিসেবে তাঁকে গ্রেপ্তারের কোনো তথ্য আমাকে জানানো হয়নি। আমি বারবার জিনজিয়াং প্রদেশের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে আমাদের বিয়ের ২০ বছর পূর্ণ হবে। আমরা একসঙ্গে তা উদযাপন করতে চাই। এখন আমি শুধু তাঁর নিরাপদে বাড়ি ফেরার আশা করতে পারি।’

আলোকচিত্রী লু গুয়াংয়ের নাই হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জিনজিয়াংয়ের আঞ্চলিক সরকারের সঙ্গে রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। তবে সরকার এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।

বেইজিংয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেং শুয়াং বলেন, তিনি এ ব্যাপারটি (লু গুয়াং) সম্পর্কে অবহিত নন।

প্রান্তিক সমাজের প্রতিদিনের বাস্তবতা ফুটে উঠেছে লু গুয়াংয়ের আলোকচিত্রে। বিশেষ করে কয়লাখনির শ্রমিক, মাদকাসক্ত ও এইচআইভি রোগীদের কথাগুলো ছবিতে তুলে ধরেছেন এই আলোকচিত্রী। তিনবার ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো পুরস্কার বিজয়ী লু চীনের পরিবেশ ও সামাজিক অবস্থা নিয়ে কাজ করেন।