ব্রাজিলের 'রাম রহিম'

ব্রাজিলের স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক গুরু জন জেরিয়া দ্য ফারিয়া। ছবি: এএফপি
ব্রাজিলের স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক গুরু জন জেরিয়া দ্য ফারিয়া। ছবি: এএফপি

তিনি ছিলেন স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক গুরু। নাম জন জেরিয়া দ্য ফারিয়া। তবে বেশি পরিচিতি ‘জন অব গড’ নামে। এহেন ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে কয়েকজন নারী এনেছেন ধর্ষণের অভিযোগ। ঘটনাস্থল ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। এ যেন ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত ভারতের কথিত আধ্যাত্মিক গুরু রাম রহিমের ব্রাজিলের সংস্করণ। ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিকসহ নানা ভিন্নতা থাকলেও দুজনের ‘কীর্তির’ মধ্যে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই।
ব্রাজিলের শহর আবেদেনিয়ায় তাঁর বসবাস। প্রতিদিন শত শত ভক্তের সমাগম ঘটে তাঁর ডেরায়। ‘জন অব গডের’ কাছে তাঁর ভক্তরা যেতেন অবসাদ দূর করার জন্য। আর এরই সুযোগ নিতেন এই কথিত গুরুদেব।
ভারতের হরিয়ানার সিরসা নামের জায়গায় রাম রহিমের ডেরা ছিল। সেখানেও ছিল অগণিত ভক্তের আনাগোনা। আর রাম রহিমের বিরুদ্ধে দুই হাজার নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। গত বছরের আগস্টে দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের অভিযোগে করা দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় রাম রহিমকে। তাঁকে নেওয়া হয় সানোরিয়া কারাগারে। এতে রাম রহিমের সমর্থকেরা পঞ্চকুলা এলাকায় তাণ্ডব শুরু করেন। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে ৩১ জন নিহত হয়।

ব্রাজিলে অবশ্য ভারতের মতো তাণ্ডব ঘটেনি। তবে গুরুদেবের নির্যাতনে সেখানে প্রথম মুখ খুলেছেন জাহিরা লেনেকে মাস নামের এক নারী চিত্রসাংবাদিক। গ্লোবো টেলিভিশনে সরাসরি অভিযোগ করে বলেছেন, গুরুর কাছে যাওয়ার পর তাঁর সঙ্গে অসদাচরণ করেন ওই গুরু। পরে ধর্ষণের শিকার হন জাহিরা। এই অভিযোগের পর আরও অভিযোগ আসতে শুরু করে। 

৭৬ বছর বয়সী ব্রাজিলের গুরু জন জেরিয়া দ্য ফারিয়া অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘চিকিৎসা দেওয়ার সময় কোনো ধরনের অসদাচরণের অভিযোগ নির্জলা মিথ্যা।’


দ্য গ্লোবো পত্রিকায় একবারে নয়জন নারী অভিযোগ করেন ধর্ষণের। তাঁরা বলেছেন, মানসিক অবসাদ থেকে শান্তি পেতে তাঁরা গুরুর কাছে গিয়েছিলেন। তাঁদের এই মানসিক অবস্থার সুযোগ নেন ওই গুরু।


জন জেরিয়া দ্য ফারিয়া আবার চিকিৎসক। তবে নিবন্ধন ছাড়া রোগী দেখার জন্য এর আগে তাঁর জরিমানা হয়েছিল। কারাভোগও করেছিলেন কিছুদিন। তবে তিনি দাবি করেন, ৩০ জনের বেশি চিকিৎসকের শক্তি এবং অন্য আরও শক্তির সমাহার তাঁর দেহে। আর ভক্তদের সেবা দিতে এসবেরই সহায়তা নেন তিনি।