পাঁচ রাজ্যের তিনটিতে এগিয়ে কংগ্রেস

কংগ্রেস–বিজেপি পতাকা
কংগ্রেস–বিজেপি পতাকা

ভারতের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল গণনা আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে।

ফলাফলের সর্বশেষ গতি-প্রকৃতিতে দেখা যাচ্ছে, পাঁচ রাজ্যের তিনটিতেই এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। এগুলো হলো রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়।

তেলেঙ্গানায় বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি বা টিআরএস। আর মিজোরামে এগিয়ে রয়েছে আঞ্চলিক দলের জোট এমএনএফ।

ভারতের এই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভার ভোট শেষ হয় গত শুক্রবার। আজ দুপুর নাগাদ ফল জানা যাবে।

পাঁচ রাজ্যের ভোটকে কেন্দ্র করে সব দলই বলে আসছিল যে এটি হবে আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল। আর ফাইনাল হবে এপ্রিল-মে মাসে।

গুরুত্ব বিবেচনায় এই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফলের দিকে ভারতবাসী নজর রাখছে।

গত ১২ নভেম্বর মাওবাদী–অধ্যুষিত রাজ্য ছত্তিশগড় থেকে নির্বাচন শুরু হয়। রাজ্যে দুই দফায় ভোট হয়। দ্বিতীয় দফার ভোট হয় ২০ নভেম্বর।

মধ্যপ্রদেশ ও মিজোরামে ভোট হয় গত ২৮ নভেম্বর। রাজস্থান ও তেলেঙ্গানায় ভোট হয় ৭ ডিসেম্বর।

পাঁচ রাজ্যের মধ্যে এখন বিজেপি ক্ষমতায় আছে তিনটিতে। এগুলো হলো মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও রাজস্থানে। কংগ্রেস ক্ষমতায় আছে মিজোরামে। আর তেলেঙ্গানায় আছে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (টিআরএস)।

শুক্রবার শেষ দফার নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর প্রকাশিত হয় বুথফেরত জরিপ। তিন রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারছে বলে এই জরিপে আভাস মেলেনি।

জরিপে আভাস দেওয়া হয়, রাজস্থানে বিজেপি ক্ষমতা হারাবে। আর মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তেলেঙ্গানায় কংগ্রেস-টিডিপি (তেলেগু দেশম পার্টি) জোটকে হারিয়ে দিতে পারে টিআরএস। অন্যদিকে, মিজোরামেও ঠাঁই পাবে না বিজেপি। সেখানকার আঞ্চলিক দলের জোট হারিয়ে দিতে পারে বর্তমান শাসক দল কংগ্রেসকে।

জরিপের আভাস অনুযায়ী ফল এলে এটা স্পষ্ট হবে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা কমছে। কমছে বিজেপির ভোট। পক্ষান্তরে মোদিবিরোধীরা আরও শক্তিশালী হবে। মোদির বিরুদ্ধে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পথ প্রশস্ত হবে।

মধ্যপ্রদেশ: পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন রয়েছে মধ্যপ্রদেশে। আসনসংখ্যা ২৩০। রাজ্যে এখন ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। বুথফেরত সমীক্ষায় ইন্ডিয়া টুডে-এএমআই আভাস দিয়েছে, ১০২ থেকে ১২০ আসনে জিততে পারে বিজেপি। কংগ্রেস জিততে পারে ১০৪ থেকে ১২২টি আসন। টাইমস নাউ-সিএনএক্স বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ১২৬ আসন। কংগ্রেস ৮৯টি। রিপাবলিক টিভি-জেকেবি বলেছে, বিজেপির ভাগ্যে জুটতে পারে ১০৮ থেকে ১২৮ আসন। কংগ্রেস পেতে পারে ৯৫ থেকে ১১৫টি। নিউজ নেশন বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ১০৮ থেকে ১১২টি আসন। কংগ্রেস পেতে পারে ১০৫ থেকে ১০৯টি আসন। ইন্ডিয়া নিউজ-এমপি নেটা বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ১০৬টি। কংগ্রেস পেতে পারে ১১২টি আসন।

রাজস্থান: রাজ্যের আসনসংখ্যা ২০০। ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। ইন্ডিয়া টুডে-এএমআই আভাস দিয়েছে, বিজেপি পেতে পারে ৫৫ থেকে ৭২টি আসন। কংগ্রেস পেতে পারে ১১৯ থেকে ১৪১টি আসন। টাইমস নাউ-সিএনএক্স বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ৮৫টি, কংগ্রেস ১০৫টি। রিপাবলিক টিভি-জেকেবি বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ৮৩ থেকে ১০৩টি আসন। কংগ্রেস ৮১ থেকে ১০১টি। নিউজ নেশন বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ৮৯ থেকে ৯৩টি। কংগ্রেস পেতে পারে ৯৯ থেকে ১০৩টি আসন।

ছত্তিশগড়: আসনসংখ্যা ৯০। বর্তমানে ক্ষমতায় বিজেপি। ইন্ডিয়া টুডে-এএমআই আভাষ দিয়েছে, বিজেপি পেতে পারে ২১ থেকে ৩০টি। কংগ্রেস ৫৫ থেকে ৬৫টি। টাইমস নাউ-সিএনএক্স বলেছে, বিজেপি ৪৬টি। কংগ্রেস ৩৫টি। ইন্ডিয়া টিভি বলেছে, বিজেপি ৪২ থেকে ৫০টি। কংগ্রেস ৩২ থেকে ৩৮টি। নিউজ নেশন বলেছে, বিজেপি ৩৮ থেকে ৪২টি। কংগ্রেস ৪০ থেকে ৪৪টি। রিপাবলিক টিভি-সি-ভোটার বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ৩৫ থেকে ৪০টি। কংগ্রেস ৪০ থেকে ৫০টি আসন।

তেলেঙ্গানা: অন্ধ্র প্রদেশ ভেঙে গঠিত হওয়া তেলেঙ্গানা রাজ্যে রয়েছে ১১৯টি আসন। ইন্ডিয়া টুডে-এএমআই বলেছে, টিআরএস পেতে পারে ৭৯ থেকে ৯১টি আসন। কংগ্রেস-টিডিপি পেতে পারে ২১ থেকে ৩৩টি। বিজেপি পেতে পারে ১ থেকে ৩টি আসন। টাইমস নাউ-সিএনএক্স বলেছে, টিআরএস ৩৬টি, কংগ্রেস-টিডিপি ৩৭টি ও বিজেপি ৭টি আসন পেতে পারে। রিপাবলিক টিভি-জেকেবি বলেছে, টিআরএস পেতে পারে ৫০ থেকে ৬৫টি, কংগ্রেস-টিডিপি ৩৮ থেকে ৫২টি, বিজেপি ৪ থেকে ৭টি আসন। নিউজএক্স-নেটার আভাস, টিআরএস ৫৭টি, কংগ্রেস-টিডিপি ৪৬টি ও বিজেপি পেতে পারে ৬টি আসন।

মিজোরাম: উত্তর–পূর্ব ভারতের পাহাড়ি রাজ্য মিজোরাম। আসনসংখ্যা ৪০। এখানে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। রাজ্যে জাতীয় দলগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে আঞ্চলিক দল। রিপাবলিক টিভি-সি-ভোটার তাদের সমীক্ষায় আভাস দিয়েছে, আঞ্চলিক দলের জোট এমএনএফ পেতে পারে ১৬ থেকে ২০টি আসন। অন্যদিকে, কংগ্রেস পেতে পারে ১৪ থেকে ১৮টি আসন। রাজ্যে অবশ্য মুখোমুখি লড়াই হয়েছে কংগ্রেসের সঙ্গে আঞ্চলিক দলের জোটের। তাই এই রাজ্যে কংগ্রেস হারাতে পারে ক্ষমতা।