স্বপ্ন আছে, পূরণের উপায় নেই

উদ্বাস্তু শিবিরে তাঁবুতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মারেব (বাঁ থেকে তৃতীয়)। এএফপি
উদ্বাস্তু শিবিরে তাঁবুতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মারেব (বাঁ থেকে তৃতীয়)। এএফপি

মারেবের (৭) স্বপ্ন অনেক বড়। কিন্তু কোনো দিনও সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কি না, জানে না ইরাকের এই উদ্বাস্তু মেয়েশিশু। তার বন্ধুরা প্রতিদিন স্কুলে গেলেও মারেবের সময় কাটে উদ্বাস্তু শিবিরের তাঁবুতে। বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন মারেবের। স্বপ্নপূরণে পড়ালেখাও করতে চায় সে। কিন্তু পাহাড়সমান বাধার নিচে চাপা পড়ে যাচ্ছে তার স্বপ্ন।

জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলার মুখে ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় মসুলের কাছের জাম্মার জেলা থেকে পালিয়ে এসেছিল মারেবের পরিবার। জাম্মার ৯০ কিলোমিটার (৬০ মাইল) পশ্চিমে হাম্মাম আল-আলিল-২ উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় হয় তাদের। মসুলের দক্ষিণ-পূর্বে এই শিবির। চলতি বছরের শুরুতে সাহায্য সংস্থাগুলোর সহায়তায় ওই শিবিরে একটি অস্থায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু হয়। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা আড়াই হাজারের মতো। এর বাইরে রয়ে গেছে আরও পাঁচ হাজার শিশু-কিশোর, যাদের ভর্তি করা যায়নি বলে জানা গেছে। মারেব তাদের একজন।

ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আড়াই হাজার শিক্ষার্থীর পাঠদানের দায়িত্বে রয়েছেন মাত্র পাঁচজন শিক্ষক। ১০টি তাঁবুতে ক্লাস নেওয়া হয়।

মারেব বলে, ‘আমি বন্ধুদের সঙ্গে বিদ্যালয়ে যেতে চাই। কিন্তু আমার পরিচয়পত্র না থাকায় আমাকে নেওয়া হচ্ছে না।’ তার বাবা ইব্রাহিম বলেন, হাসপাতাল থেকে দেওয়া মেয়ের জন্মসনদ আছে তাঁর কাছে। কিন্তু বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য সরকারি পরিচয়পত্র চেয়েছে। সেটি জোগাড় করতে পারেননি তিনি।

গত গ্রীষ্মে ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনী মসুলের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ বাড়িতে ফিরতে পারেনি। লড়াইয়ে বেশির ভাগ বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায় এই শহরের হাজার হাজার বাসিন্দা এখনো উদ্বাস্তু শিবিরেই দিন কাটাচ্ছে।