৫৯২০ কোটিতে ৫ কিমির দ্বিতল সেতু

বগিবিল দোতলা সেতুর ওপরের তলায় থাকবে সড়কপথ। নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। ছবি: সংগৃহীত
বগিবিল দোতলা সেতুর ওপরের তলায় থাকবে সড়কপথ। নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের আসামে প্রমত্ত ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর তৈরি হয়েছে দ্বিতল বগিবিল সেতু । ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ২১ বছর পর আগামীকাল মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) সেতুটি উদ্বোধন করা হবে।

এনডিটিভি ও জিনিউজের খবরে বলা হয়েছে, এ সেতুর উদ্বোধনে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হবে ভারতের আসাম এবং অরুণাচলবাসীর। ২১ বছরের স্বপ্ন পূরণ হবে তাদের। আগামীকাল মঙ্গলবার দুই রাজ্যের সংযোগকারী ভারতের দীর্ঘতম দ্বিতল সেতু ‘বগিবিল সেতু’ উদ্বোধন করবেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এটি আসামের দিব্রুগড় জেলার সঙ্গে অরুণাচলের ধামাজি জেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে। ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর তৈরি হওয়া ৪ দশমিক ৯৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটি ভারতের সবচেয়ে বড় দোতলা সেতু।

বগিবিল দ্বিতল সেতুর নির্মাণকাজের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
বগিবিল দ্বিতল সেতুর নির্মাণকাজের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

বগিবিল দোতলা সেতু নির্মাণশৈলী এবং প্রযুক্তির দিক দিয়ে অভিনব। কারণ এ সেতু তৈরিতে নাটবল্টু নয়, ঝালাই করে লোহা জোড়া লাগানো হয়েছে। সেতুর ওপরের তলায় থাকবে সড়কপথ। তিন লেনের এই পথে চলবে বাস, ট্রাক, লরিসহ যাবতীয় যানবাহন। আর নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। এ জন্য পাতা হয়েছে ডাবল লাইন। সামরিক ট্যাংক চলাচলেও সেতুটি এতটুকুও টলবে না।

ভারতের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্রহ্মপুত্রের ওপর তৈরি বগিবিল সেতুটি আসামের তিনসুকিয়া থেকে অরুণাচল প্রদেশের নহরলাগুন যাওয়ার সময় ১০ ঘণ্টা কমিয়ে দেবে। উত্তর-পূর্ব দিকে যাতায়াতের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হবে এই সেতু।

ভারতের আসাম রাজ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর তৈরি হয়েছে বগিবিল সেতু। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের আসাম রাজ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর তৈরি হয়েছে বগিবিল সেতু। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘ দোতলা সেতুটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ৫ হাজার ৯২০ কোটি রুপি। ১৯৯৭ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া। এরপর, সম্ভাব্যতা যাচাই করার পর ২০০২ সালে নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত অটল বিহারি বাজপেয়ি। বাজপেয়ির জন্মদিন ২৫ ডিসেম্বরেই সেতুটি উদ্বোধন করবেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

ভারতের রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থাপত্য ও নির্মাণশিল্পের অনন্য নজির বগিবিল সেতু। শুধু যোগাযোগই নয়, উত্তর-পূর্বের সীমান্ত রক্ষার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা পালন করবে সেতুটি। খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্রের বুকে যেকোনো ধরনের সেতু তৈরি বড় চ্যালেঞ্জের। এলাকাটি অতিবর্ষণ এলাকা। আবার ভূমিকম্পপ্রবণও। ফলে সব দিক দিয়েই সেতুটি স্বতন্ত্র।