কাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার ভারত বনধ

কাল মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে ভারতব্যাপী শুরু হচ্ছে ৪৮ ঘণ্টার বনধ। কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন ও কেন্দ্রীয় কর্মচারী ইউনিয়ন ১২ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গে তাদের সমর্থনে সব শ্রমিক সংগঠন মাঠে নামলেও এ আন্দোলনে থাকছে না তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই বনধ প্রতিহত করার জন্য জনগণ ও দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে আন্দোলন আহ্বানকারী শ্রমিক সংগঠন থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, বনধে তৃণমূল বাধা দিলে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। ফলে এই বনধ পালন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার এক নির্দেশ জারি করে বলেছে, এই বনধে সব সরকারি কর্মীকে উপস্থিত থাকতে হবে নিজ নিজ দপ্তরে। কেউ ছুটি নিতে পারবে না। অনুপস্থিত থাকলে কেটে নেওয়া হবে তাঁদের বেতন ও ছুটি। পাশাপাশি পরিবহনমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, বনধে কারও গাড়ি বা বাস ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। বনধের দিন কলকাতাকে সচল রাখতে বাড়ানো হবে বাস, ট্যাক্সিসহ ট্রাম, লঞ্চ বা ফেরির সংখ্যা। তবে ইতিমধ্যে ব্যাংক কর্মচারী ইউনিয়ন এই বনধে সমর্থন জানানোয় গোটা ভারতে ব্যাংকের এটিএম পরিষেবার ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রতিদিন কলকাতা শহরে ১ হাজার ১৫০টি সরকারি বাস, ৭৫০০ থেকে ৯ হাজার বেসরকারি বাস ও মিনিবাস, ২০ থেকে ২২ হাজার ওলা, উবার, ২০ হাজার ট্যাক্সি চলাচল করে। কাল সেই সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এ ছাড়া কলকাতার মাঠে থাকছে ৩ হাজারেরও বেশি পুলিশ। এর মধ্যে শহরের বিশেষ ৩০০টি স্থানে থাকবে পুলিশের বিশেষ পিকেট।

তবে বনধ আহ্বানকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা কোনো বাধা মানবেন না। প্রয়োজনে তাঁরাও প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। এসব করতে তাঁদের বিশেষ স্ট্রাইক টিম থাকবে। দেশের সব কারখানা, ব্যাংক, বিমাসহ সব দপ্তরে ধর্মঘট সফল করতে থাকবে পৃথক টিম। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও থাকবে ধর্মঘট পালনের জন্য পৃথক ছাত্র-যুব ব্রিগেড।

আন্দোলনকারীদের ১২ দফার মধ্যে অন্যতম দাবিগুলো হলো, মাসিক বেতন ন্যূনতম ১৮ হাজার রুপি করা, মাসিক ৬ হাজার রুপি সর্বজনীন পেনশন দেওয়া, বেসরকারি সংস্থাকে জাতীয়করণ বন্ধ করা।

এর আগে এই ধর্মঘটের বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলা ত্রুটির কারণে গত শুক্রবার খারিজ করে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট।