নাগরিকত্ব আইন সংশোধন ইস্যুতে আসামে অশান্তি চলছেই
অমুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দিতে আইন সংশোধন প্রক্রিয়ার জেরে দেশটির আসাম রাজ্যে অশান্তি চলছেই। আসামের পাশাপাশি ত্রিপুরাও উত্তেজনায় টগবগ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
গতকাল মঙ্গলবার লোকসভায় কণ্ঠভোটে পাস হয় নাগরিকত্ব সংশোধন বিল, ২০১৬। আজ বুধবার বিলটি পেশ হবে রাজ্যসভায়। রাজ্যসভায় অবশ্য বিলটি পাস হওয়ার সম্ভাবনা কম।
লোকসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও রাজ্যসভায় বিজেপির প্রয়োজনীয় সদস্যের সমর্থন নেই। কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল বা আরজেডির মতো বিজেপিবিরোধী দলের পাশাপাশি বিজেপির শরিক দলগুলোও নাগরিকত্ব বিলের বিরোধী।
অ-বিজেপি দলগুলো লোকসভার মতো রাজ্যসভায়ও বিলটির বিরোধিতায় সোচ্চার হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। দলগুলো সেটা ঘোষণাও করেছে। বিজেপিও বিষয়টি জানে। তবু মরিয়া চেষ্টা হিন্দুদের মন জয়ে।
বিলটিতে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে অনুপ্রবেশকারী সেই দেশের সংখ্যালঘুরা এ দেশের নাগরিকত্ব পাবেন। এই তালিকা থেকে মুসলিমদের বাদ রাখা হয়েছে।
কিন্তু বিজেপিবিরোধীরা ১৯৭১-এর ২৫ মার্চকে সবার জন্যই ভিত্তি বছর ধরার পক্ষে। এমনকি, জাতপাতের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব চান না তাঁরা।
বিলটির বিরোধিতায় আসামে শুরু হয়েছে আন্দোলন। মঙ্গলবার হরতাল পালিত হয়। বিভিন্ন জায়গায় হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের সংঘর্ষ হয়।
পুরো উত্তর-পূর্ব ভারতে গোলমাল শুরু হয়েছে। বিজেপির সঙ্গ ছাড়ারও হিড়িক লেগেছে। আসামের আঞ্চলিক দল অসম গণপরিষদের পর মেঘালয়ের এনপিপিও বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছে।
পরিস্থিতি থেকে ফায়দা নিতে মাঠে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। সামনেই ভারতের লোকসভা নির্বাচন।
শুধু জোট-জটিলতাই নয়, ভাঙছে বিজেপির ঘরও। দলের প্রদেশ মুখপাত্র মেহেদি আলম বরা মঙ্গলবার বিজেপি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁর সাফ কথা, রাজ্যবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করে বিজেপি করা সম্ভব নয়।