চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে তৎপর এমপিদের জোট

সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে আপত্তি রয়েছে অনেক। আবার চুক্তি ছাড়া বিচ্ছেদ কার্যকরেরও আছে মহা বিপত্তি। তাই যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের সর্বদলীয় এমপিদের একটি জোট চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে তৎপর হয়ে উঠেছে।

গত মঙ্গলবার সরকারের আর্থিক বিলে (ফাইন্যান্স বিল) সংশোধনী চেয়ে সংসদে একটি প্রস্তাব পাস হয়। এর ফলে চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট কার্যকর করতে গেলে সরকার জনগণের ওপর করের বাড়তি বোঝা চাপাতে পারবে না। আর্থিক ক্ষমতা সীমিত করে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট কার্যকর সরকারকে নিরুৎসাহিত করতেই এই কৌশল।

বিরোধী দল লেবার পার্টির আইনপ্রণেতা ইভেট কোপার এবং ক্ষমতাসীন দলের সাবেক মন্ত্রী নিকি মর্গান যৌথভাবে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা এতে সমর্থন দেন। আর ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ২০ জন আইনপ্রণেতা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। মাত্র ৭ ভোটের ব্যবধানে (পক্ষে ৩০৩, বিপক্ষে ২৯৬) পাস হওয়া প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের জন্য বড় রকমের হার বলে বিবেচিত হচ্ছে।

সম্পাদিত চুক্তি পাস না হলে থেরেসা মে চুক্তি ছাড়াই বিচ্ছেদ কার্যকরে উদ্যোগী হবেন—এমন ধারণা বেশ জোরালো। বিচ্ছেদপন্থীরাও বলছেন, সম্পাদিত চুক্তির চাইতে চুক্তি ছাড়াই বেরিয়ে আসা দেশের জন্য তুলনামূলক ভালো। তবে বিচ্ছেদবিরোধীদের অবস্থান ভিন্ন। তাঁরা সম্পাদিত চুক্তির সমর্থক নন। আবার চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদ হোক, তা–ও চান না। তাঁদের চাওয়া, সম্পাদিত চুক্তি পাস না হলে সরকার যাতে নতুন করে সমঝোতার উদ্যোগ নেয় এবং প্রয়োজনে পুনরায় গণভোটের আয়োজন করে। এ জন্য সংসদে বিভিন্ন প্রস্তাব এনে তাঁরা সেদিকেই গতিপথ ঠিক করে দেওয়ার কৌশল নিয়েছেন।

ব্রেক্সিট কার্যকর করতে দীর্ঘ প্রায় ১৮ মাসের সমঝোতার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছান যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ এমপির সমর্থন পেলে তবেই কার্যকর হবে এই চুক্তি। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর চুক্তি অনুমোদন প্রশ্নে সংসদে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। এমপিদের তুমুল বিরোধিতা আঁচ করে হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী মে একেবারে শেষ মুহূর্তে ভোটাভুটি পিছিয়ে দেন। আগামী মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) ভোটাভুটির নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

আগামী ২৯ মার্চ ব্রেক্সিট কার্যকর হবে বলে দিনক্ষণ ঠিক করা রয়েছে।