সিবিআই-প্রধানের পদ থকে অলোককে সরালেন মোদি

নরেন্দ্র মোদি ও অলোক ভার্মা
নরেন্দ্র মোদি ও অলোক ভার্মা

মোটে দুই দিন! ঘণ্টার হিসাবে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। এর মধ্যেই পদ হারালেন অলোক ভার্মা। আদালতের রায়ে সিবিআই–প্রধানের পদ ফিরে পেয়েছিলেন তিনি। এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটি অলোক ভার্মাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিবিআই–প্রধানের পদ থেকে অলোক ভার্মাকে সরিয়ে দেওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এ খবর প্রকাশ করেছে। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, আদালতের রায়ে সিবিআই–প্রধানের পদ ফিরে পাওয়ার পরপরই মোট ১০ জন কর্মকর্তার বদলি ঠেকিয়েছেন অলোক ভার্মা। অন্যদিকে আরও ৫ কর্মকর্তাকে বদলি করেছেন অলোক। এরপরই এল অলোককে সরিয়ে দেওয়ার খবর।

এনডিটিভি বলছে, আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের কমিটি বৈঠকে বসে। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এই বৈঠক হয়। ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, অলোক ভার্মাকে সরানোর সিদ্ধান্ত ২-১ ভোটে পাস হয়। কমিটিতে থাকা কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। অলোক ভার্মাকে ফায়ার সার্ভিসের প্রধানের দায়িত্বে পদায়ন করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার ভারতের শীর্ষ তদন্ত সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) প্রধান অলোক ভার্মাকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্ট। এতে তিন মাসের মাথায় আবার জায়গা ফিরে পান তিনি। অলোক ভার্মার জায়গায় অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নিয়োগের বিষয়টিও বাতিল করেছিলেন আদালত। তবে বড় ধরনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছিল না অলোক ভার্মার।

এদিকে অলোক ভার্মাকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ভারতে নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘সিবিআই–প্রধানকে সরাতে কেন প্রধানমন্ত্রী এত তাড়াহুড়ো করলেন? কেন তিনি নির্বাচক কমিটির সামনে সিবিআই–প্রধানকে মামলা উপস্থাপনের সুযোগ দিলেন না? উত্তর: রাফাল।’

গত বছরের ১৫ অক্টোবর নিজেদের বড় কর্তা রাকেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে সিবিআই নিজেই। রাকেশ আস্থানাসহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগে বলা হয়, মাংস রপ্তানিকারক মইন কুরেশির বিরুদ্ধে থাকা মামলায় হস্তক্ষেপের বিনিময়ে আস্থানা ঘুষ নিয়েছেন। মইন কুরেশির বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে কলকাঠি নেড়েছেন অলোক ভার্মা। কারণ, শুরু থেকেই রাকেশের বিরোধী ছিলেন তিনি।

অবশ্য এ ঘটনার আগেই অলোকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন রাকেশ। আর আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠনের পর আদালতে গিয়ে আগাম জামিন নেন রাকেশ আস্থানা। পরে দুই সিবিআই কর্তাকেই ছুটিতে পাঠায় মোদি সরকার। অলোক ভার্মা সরকারের সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। এরপর গত মঙ্গলবার আদালতের আদেশে পদ ফিরে পান তিনি।