সেই রাম রহিম এবার সাংবাদিক হত্যায় দোষী সাব্যস্ত

নিহত সাংবাদিক রাম চন্দ্র ছত্রপতি। ছবি: সংগৃহীত
নিহত সাংবাদিক রাম চন্দ্র ছত্রপতি। ছবি: সংগৃহীত

নারী ভক্তদের (সাধ্বী) ধর্ষণের দায়ে সাজা হওয়ার পর এবার সাংবাদিক হত্যায় দোষী সাব্যস্ত হলেন ভারতের বিতর্কিত ‘ধর্মগুরু’ গুরমিত রাম রহিম সিং । আজ শুক্রবার হরিয়ানার বিশেষ আদালত তিন সহযোগীসহ তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। আগামী ১৭ জানুয়ারি এই মামলায় তাঁদের শাস্তি ঘোষণা করা হবে।

রাম রহিমের অপরাধ, তাঁর নির্দেশে রাম চন্দ্র ছত্রপতি নামের এক সাংবাদিককে ২০০২ সালের ২৪ অক্টোবর প্রকাশ্যে গুলি করা হয়। আহত হয়ে তিনি ওই বছরের ২১ নভেম্বর মারা যান। নিহত এই সাংবাদিক সেখানকার ‘পুরা সচ’ পত্রিকার কর্মরত ছিলেন।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, নারী ভক্তদের ধর্ষণের বিষয়টি নিজ পত্রিকায় প্রকাশ করেছিলেন সাংবাদিক রাম চন্দ্র ছত্রপতি। এতে ক্ষুব্ধ হন রাম রহিম। ওই সাংবাদিককে হত্যা করতে সহযোগীদের নির্দেশ দেন। পরে রাম রহিমের দুই সহযোগী গুলি করেন সাংবাদিক রাম চন্দ্রকে। এর সঙ্গে তাঁর আরেক সহযোগীও জড়িত। আদালত তাঁদের সবাইকে অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত করেন। রায় ঘোষণার সময় প্রত্যকে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে সুনারিয়ার কারাগারে বন্দী রাম রহিম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রমে যুক্ত হন। তাঁর সঙ্গে দোষী সাব্যস্ত অপর তিনজন হলেন, কুলদিপ সিং, নির্মল সিং ও কৃষ্ণ লাল। এর মধ্যে প্রথম দুই সহযোগী ওই সাংবাদিককে সরাসরি গুলি করেন।

গুরমিত রাম রহিম সিং। ছবি: সংগৃহীত
গুরমিত রাম রহিম সিং। ছবি: সংগৃহীত

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, হত্যাকাণ্ডের পর ২০০৩ সালে তার তদন্তভার দেওয়া হয় ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইকে। প্রথমে ওই হত্যাকাণ্ডে রাম রহিমের নাম ছিল না। পরে ২০০৬ সালে রাম রহিমের তৎকালীন গাড়ির চালক খাট্টা সিংয়ের সাক্ষ্যের মধ্যে দিয়ে এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর জড়িত থাকার প্রমাণ পায় সিবিআই। ওই চালক গুলির ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন।

প্রতিবেদন আরও বলা হয়, রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়িকে চিঠি লিখেছিলেন কয়েকজন সাধ্বী। সেই চিঠি নিজের পত্রিকায় বেনামে ছাপান সাংবাদিক রাম চন্দ্র। এ ছাড়া তিনি ওই চিঠি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, সিবিআই ও আদালত পর্যন্ত পৌঁছাতে সাধ্বীদের সহযোগিতা করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, সাধ্বীদের করা ধর্ষণ মামলায় ২০১৭ সালের আগস্টে রাম রহিমকে ২০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে দুই সাধ্বীকে ধর্ষণের প্রমাণ পেয়েছিলেন আদালত । ২০১৭ সাল থেকে তিনি সুনারিয়ার কারাগারে আছেন।