শিলচরে শ্রীজাতকে হেনস্তা বিজেপির, মমতার ক্ষোভ

কবি শ্রীজাত। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
কবি শ্রীজাত। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের আসামের শিলচরে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে বিজেপির নেতা-কর্মীদের রোষের শিকার হয়েছেন কলকাতার কবি শ্রীজাত। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

বাঙালি অধ্যুষিত শিলচরে গতকালের অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল শিলচরের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংগঠন ’এসো বলি’। স্থানীয় একটি অভিজাত হোটেলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান চলার সময় হঠাৎ করেই সেখানে উপস্থিত হন বিজেপি নেতা বাসুদেব শর্মা ও তাঁর দলবল। সঙ্গে ছিল বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী দলের আরও কয়েকজন।

অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকে বিজেপি নেতা হুংকার দিয়ে বলেন, ‘আমাদের কিছু কথা আছে।’ এরপর কবি শ্রীজাতের একটি ‘ত্রিশূলে কনডম’ কবিতার কয়েকটি লাইন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বিজেপি নেতা বাসুদেব শর্মার এহেন হুমকি এবং কবিতা নিয়ে প্রশ্ন করায় ক্ষেপে যান উদ্যোক্তারা। কথা-কাটাকাটির এক পর্যায় বিজেপির সঙ্গে থাকা গেরুয়া বাহিনীর সদস্যরা অনুষ্ঠানস্থলেই শুরু করে বিক্ষোভ। তবে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) পাহারায় অনুষ্ঠান চালিয়ে যান উদ্যোক্তারা। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ইট এবং পাথর ছুড়তে থাকলে বন্ধ হয়ে যায় অনুষ্ঠান।

এ সময় বিজেপির নেতা ও কর্মী সমর্থকেরা দাবি করেন, ঝামেলা পাকাতে ’তৃণমূলের দালাল’ কবি শ্রীজাতকে এখানে পাঠানো হয়েছে। তবে উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় নিরাপদের মধ্যে রাখা হয় শ্রীজাতকে।

ঘটনার কথা চলে যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে। শুনেই তিনি ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তিনি বলেন, ‘বিজেপি তো বাংলা তথা ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি বিদ্বেষপরায়ণ। একনায়কতন্ত্রের ধারক।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং অন্য মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে দায়িত্ব দেন কলকাতায় ফেরা না পর্যন্ত শ্রীজাতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার। তারপর এই দুই মন্ত্রী শ্রীজাতের সঙ্গে কথা বলে তাঁর কলকাতা ফেরা নিশ্চিত করেন। আজ রোববার সকালে কলকাতায় ফিরবেন শ্রীজাত। গতকালই কড়া পাহারায় তাঁকে অনুষ্ঠান থেকে শিলচর সার্কিট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ ঘটনার বিষয়ে শ্রীজাত বলেছেন, ‘ফিরতে যাতে অসুবিধা না হয় সে জন্য সার্বিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শিলচরের মানুষ আমাকে যেভাবে আগলে রেখেছেন, সেই ঋণ সঙ্গে নিয়েই আমি কলকাতা ফিরব’।