আফগানিস্তানেও আছেন ট্রুডো!

হুবহু কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মতো দেখতে আফগানিস্তানের ট্যালেন্ট শোর প্রতিযোগী আবদুল সালাম মাফতুন। ছবি: এএফপি
হুবহু কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মতো দেখতে আফগানিস্তানের ট্যালেন্ট শোর প্রতিযোগী আবদুল সালাম মাফতুন। ছবি: এএফপি

আফগানিস্তানে গানের ট্যালেন্ট শো ‘আফগান আইডল’–এর এক প্রতিযোগী আবদুল সালাম মাফতুন। তাঁকে দেখলে চমকে উঠতে হয়। কারণ, তিনি দেখতে হুবহু কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মতো। দেখতে ট্রুডোর মতো হওয়ায় রাতারাতি তারকা বনে গেছেন তিনি।

আজ সোমবার এএফপির খবরে জানানো হয়, আফগানিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বদকশানের প্রত্যন্ত ও দরিদ্র এলাকা থেকে এসেছেন আবদুল সালাম মাফতুন। কখনো তিনি জাস্টিন ট্রুডোর নাম শোনেননি। গানের প্রতিযোগিতার বিচারক তাঁকে ট্রুডোর ব্যাপারে জানান।

২৯ বছরের মাফতুনের মুখমণ্ডল ট্রুডোর মতো একটু লম্বাটে। গাঢ় বাদামি চুল আর চোখ। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় নেতা জাস্টিন ট্রুডোর মতো দেখতে হওয়ার কারণেই মাফতুন ওই ট্যালেন্ট শোতে বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে।

ট্রুডোর সঙ্গে মাফতুনের পার্থক্য হলো তাঁর সামনের দুটি দাঁত সোনা দিয়ে বাঁধানো। এএফপিকে মাফতুন বলেন, ‘লোকেরা আমার নাম ভুলে গেছে। তাঁরা আমাকে জাস্টিন ট্রুডো নামে ডাকে। আমি ট্রুডোর বিষয়ে কিছু জানতাম না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রুডোর ছবি দেখার পর তাঁর সম্পর্কে জেনেছি।’

আফগানিস্তানের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে আবদুল সালাম মাফতুন। দেখে মনে হয় যেন ট্রুডোই এমন পোশাক পরেছেন। ছবি: এএফপি
আফগানিস্তানের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে আবদুল সালাম মাফতুন। দেখে মনে হয় যেন ট্রুডোই এমন পোশাক পরেছেন। ছবি: এএফপি

মাফতুন বলেন, দেখতে ট্রুডোর মতো হওয়ার কারণে প্রতিযোগিতায় জেতার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পাশ্চাত্যের পোশাক ও সাজে জাস্টিন ট্রুডোর ছবি আর আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী টুপি পরা মাফতুনের ছবি জোড়া দেওয়া হয়েছে। ফেসবুকে এই ছবিতে মন্তব্য এসেছে অনেক। ট্রুডো ও মাফতুনের চেহারার সাদৃশ্য নিয়ে আফগান স্টার প্যানেলের আলোচনার ভিডিও ফেসবুকে দেওয়া হয়েছে। কয়েক হাজারবার ভিডিওটি দেখা হয়েছে।

গানের চর্চা করছেন আবদুল সালাম মাফতুন। ছবি: এএফপি
গানের চর্চা করছেন আবদুল সালাম মাফতুন। ছবি: এএফপি

ফেসবুকে নেইলা আবদুলজাদাহ মন্তব্য করেছেন, ট্রুডোর হারিয়ে যাওয়া যমজ ভাই। ফৌজিয়া জেরেহ মন্তব্য করেছেন, ‘আমি মনে করি, তাঁদের গল্প বলিউডের কোনো সিনেমার মতো। জন্মের পর তাঁরা আলাদা হয়ে গিয়েছিল। পরে হারিয়ে যাওয়া ভাইকে খুঁজে পাওয়া গেছে।’ আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘এটা একেবারে ট্রুডোর নকল। আমি ট্রুডোকে আফগান স্টার হতে দেখে আনন্দিত।’

আগামী বৃহস্পতিবার এই প্রতিযোগিতার আরেক রাউন্ড হবে। সেখানে আটজন প্রতিযোগী অংশ নেবেন। তাঁদের মধ্যে থাকবেন মাফতুন।

মাফতুন রোমান্টিক ও লোকজ গান করেন। তিনি আফগানিস্তানের দারি ও পশতু দুই ভাষাতেই গান করেন।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও আফগান সংগীতশিল্পী আবদুল সালাম মাফতুনের জোড়া দেওয়া ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তুলেছে। ছবি: এএফপি
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও আফগান সংগীতশিল্পী আবদুল সালাম মাফতুনের জোড়া দেওয়া ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তুলেছে। ছবি: এএফপি

গানের প্রতিযোগিতায় চার বিচারকের একজন ছিলেন আফগান বংশোদ্ভূত কানাডীয় সংগীতশিল্পী কায়েস উলফাত। তিনিই প্রথম মাফতুনের চেহারার সঙ্গে ট্রুডোর চেহারার মিল খুঁজে পান। বলেন, ‘মাফতুন আমার দেশের প্রধানমন্ত্রীর মতো। তাঁর গানের গলাও খুব সুন্দর। তাঁর গলা সৃষ্টিকর্তাপ্রদত্ত। মাফতুন পরবর্তী জাস্টিন বিবার হতে পারেন।’

মাফতুন বিয়ে ও জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গান গেয়ে এবং বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। চার সন্তান রয়েছে তাঁর। মাফতুনের বিশ্বাস, ট্যালেন্ট শোতে পাওয়া খ্যাতির কারণে তাঁর চাহিদা বেড়ে যাবে। অনেক অনুষ্ঠানেই তাঁর ডাক পড়বে।

মাফতুনের আশা একদিন না একদিন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে তাঁর দেখা হবে। যদিও তাঁর কানাডায় যাওয়ার সুযোগ কম। মাফতুন বলেন, ‘আমি ট্রুডোর সঙ্গে দেখা করতে চাই। কারণ, তিনি বিশ্বে অন্যতম একজন ব্যক্তিত্ব। আর আমি আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে এসেছি।’