নাগরিকত্ব সংশোধনী নিয়ে আসামে বিজেপিতেই বিরোধ

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে আসামে বিজেপির অভ্যন্তরেই বিরোধ দিন দিন স্পষ্ট হচ্ছে। রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষের পথ ধরে তিনজন বিধায়ক এখন পর্যন্ত দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। ‘ভোগালি বিহু’র পর সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে বিরোধীদের দাবি।

গোটা আসাম মেতে উঠেছে মাঘ বিহু বা ভোগালি বিহু উৎসবে। বাংলার পৌষসংক্রান্তির মতোই অসমিয়াদের কাছে বিহুও বিশেষ পার্বণ।

চৈত্রসংক্রান্তিতে রঙালি বিহুতে নাচ-গান মূল আকর্ষণ হলেও পৌষসংক্রান্তির ভোগালি বিহুর আকর্ষণ হলো পিঠাপুলি থেকে শুরু করে হরেক রকমের ভোজ।

কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বেশ বিপাকে আসামের বিজেপি নেতারা। তাই তাঁদের কাছে ভোগালির বিহুর আনন্দ এখন আশঙ্কায় পরিণত হয়েছে। কারণ, বিহুর পর দলীয় বিধায়কদের একটা বড় অংশ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বিদ্রোহ করতে পারে।

ইতিমধ্যে অবশ্য প্রকাশ্যে বিলটির সমালোচনা শুরু হয়েছে। দলীয় বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ হিতেন্দ্র নাথ গোস্বামী প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের। তাঁরই পথ ধরে দলীয় বিধায়ক অতুল বরা, পদ্ম হাজারিকা আগেই সমালোচনা করেছিলেন। সেই পথ ধরেই আজ মঙ্গলবার দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিজের মতামত ব্যক্ত করলেন হিতেন্দ্র নাথ গোস্বামী।

বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার শর্ত সাপেক্ষে আইন সংশোধন করা হচ্ছে বিলটিতে। ৮ জানুয়ারি বিলটি ভারতীয় লোকসভায় পাস হয়েছে। রাজ্যসভায় অবশ্য এখনো বিলটি পাস হয়নি।

এর মধ্যে আসামের বিজেপির শরিক অসম গণপরিষদ জোট ভেঙে মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে এসেছে। দলের সভাপতি অতুল বরা জানিয়েছেন, ১৮ জানুয়ারি তাঁরা মশালমিছিল করবেন। অনশনে বসবেন ২৪ জানুয়ারি।

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া জানিয়েছেন, রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টি করতেই বিজেপি নাগরিকত্ব বিল সামনে নিয়ে এসেছে। তাঁর দাবি, আরও অনেক বিজেপি বিধায়কই বিহুর পর বিলের প্রতিবাদে সবর হবেন।

বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী হীমন্ত বিশ্বশর্মার পাল্টা দাবি, দলে কোনো বিরোধ নেই। নাগরিকত্ব বিল আসাম সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যেই পাস করানো হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

হীমন্তের অভিযোগ, বিরোধীরাই মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বিলটি লোকসভায় পাস করানোয় দলীয় নেতৃত্বকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি।