যে মেলায় এখনো চলে দ্রব্য বিনিময়
মুদ্রার দরকার নেই। টাকা বা রুপি এখানে ব্রাত্য। বিনময় প্রথা এখনো চালু রয়েছে আসামের জনাবিল মেলায়। শতাব্দী প্রাচীন প্রথাকে আগলে রেখে গুয়াহাটির ৩৫ কিলোমিটার দূরে মরিগাঁওতে আজ থেকে শুরু হয়েছে জনাবিল উৎসব।
অসমিয়া ভাষায় ‘জনা’ শব্দের অর্থ চাঁদ। আর ‘বিল’ মানে বাংলার মতোই বিল বা বিরাট জলাশয়। মাঘ মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার বসে এই মেলা। এবারও বসেছে। জনাবিলেই পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে এই মেলা হয়ে আসছে। জনাবিল আসলে চাঁদের মতো দেখতে একটি বিল। সেই বিলের কারণেই এলাকার নামও জনাবিল।
মেলার মূল আকর্ষণই হলো বিনিময় প্রথা। উপজাতিরা তাঁদের নিজস্ব পসরা সাজিয়ে আনেন। থাকে হলুদ, আদা বিভিন্ন শাকসবজি। ইদানীং এ মেলায় কাঠের আগুনে সেঁকা বিভিন্ন মাছের রোস্টও পাওয়া যাচ্ছে। সবই টাটকা মাছের। এবারও উঠছে চিংড়ি থেকে শুরু করে হরেক দেশি মাছের বিভিন্ন সেঁকা পদ।
ইদানীং এই মেলাতেও ঘরে তৈরি জিনিসের সঙ্গেই চলছে কারখানায় উৎপাদিত সামগ্রীও। বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে রুপিও চলছে। তবে উপজাতিদের ব্যাপক অংশগ্রহণ আর স্থানীয় লোক সংস্কৃতি জনাবিলকে পর্যটকদের কাছেও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
আসলে পৌষসংক্রান্তির পর থেকেই আসাম হয়ে ওঠে উৎসবমুখর। নিজেদের পরম্পরাকে ধরে রাখতে বিশেষ যত্নশীল আসামের মানুষ।
তাই মাঘ বিহুতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেই এবারও বিভিন্ন জায়গায় আয়োজন করা হয় মহিষের লড়াই। ভোগালি বিহুতে ষাঁড়ের লড়াই উপভোগও করে বহু মানুষ।
ফসল তোলার আনন্দে মেতে ওঠার ঐতিহ্য এখনো ধরে রেখেছে অসমের মানুষ। জনাবিল মেলা বা মহিষের লড়াই সেই ঐতিহ্যেরই অংশ।